বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সেগুনবাগিচার কার্যালয়ে যান ড. ইউনূস। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে তলব করা হয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে সকাল ১০টা ৫৬ মিনিটো দুদক কার্যালয় থেকে বের হন তিনি। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন “আমি কোনো অপরাধ করিনি, তাই শঙ্কিত কেন হবো”.
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক মুনাফা অংশীদারত্ব তহবিল (ডব্লিউপিপিএফ) থেকে ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।
দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের ডব্লিউপিপিএফের কোনো অনিয়মের সঙ্গে তাঁর মক্কেল জড়িত নন।
তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ম অনুযায়ী লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী বলেন, ড. ইউনূস 'আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল' হওয়ায় জাতিসংঘে বৈঠক থাকা সত্ত্বেও তদন্তে তাদের সহায়তা করতে দুদকে গিয়েছেন।
গ্রামীণ টেলিকমের ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডব্লিউপিপিএফ) ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীরা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। তারা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখেন এবং কিছু অভিযোগ অধিকতর তদন্তের জন্য দুদকে প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে দুদক একটি মামলা করেছে এবং তদন্ত চালাচ্ছে। তদন্তের অংশ হিসেবে কমিশন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।’
অর্থ পাচার ও আত্মসাতের মামলায় ড. ইউনূসকে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূসের ব্যক্তি ইমেজের প্রভাবে দুদকের তদন্ত প্রভাবিত করার সুযোগ আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘দুদক কারো ব্যক্তিগত পরিচয় দেখে না। প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ নেই।’
তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি আত্মগোপন করতে পারেন কিংবা আলামত নষ্ট করতে পারেন অথবা সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন সে ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তের প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করতে পারেন অথবা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞায় পদক্ষেপ নিতে পারেন।’
এর আগে মঙ্গলবার ড. ইউনূস ও বাকি ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক।
দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা এক চিঠিতে ড. ইউনূসকে তদন্তের উদ্দেশ্যে তলব করেন।
২৭ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসকে লেখা চিঠিতে দুদক জানায়, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিলসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ড. ইউনূসের বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।