স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর আরও জোর দিতে হবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের মূল কারণ দুটি। এর একটি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে থেমে থেমে বৃষ্টির সঙ্গে উষ্ণ আবহাওয়া, যা এডিস মশা জন্মানোর জন্য উপযুক্ত। আর অন্যটি হচ্ছে নিজ বসতবাড়ি ও এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে আমরা সচেতন হলেই এডিস মশার জন্মানোর উৎস ধ্বংস করতে পারি।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকার একটি হোটেলে দেশব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ ২০২৩–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, নিজ আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখি, সবাই মিলে সুস্থ থাকি-এই স্লোগানে উজ্জীবিত হয়ে মারাত্মক ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে এর প্রজনন স্থান নষ্ট করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু রোগটি এখন আর শুধু ঢাকা শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ৭৬ শতাংশ ডেঙ্গু রোগী ঢাকার বাইরের। ফলে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু রোগ দুটি সারা দেশে সমানভাবে ছড়িয়েছে। সে জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে সারা দেশের ৬৪ জেলায় ১৮ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী একযোগে সপ্তাহব্যাপী এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।
তাজুল ইসলাম এ সময় পৃথিবীর যেসব দেশ ডেঙ্গু রোগে বেশি আক্রান্ত হয় সেসব দেশের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে কার্যকর কোনো উপায় এখন পর্যন্ত কেউ বলতে পারেনি। তাই এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে এবং মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ-২০২১ সালেই ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্য রোগ প্রতিরোধে জাতীয় নির্দেশিকা প্রণয়ন করে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ’ উদযাপন ও প্রচার অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ইউনিসেফের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. শের আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. এন্থনি এসহোফনি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেঙ্গু সিনড্রোমের ক্লিনিক্যাল ব্যবস্থাপনার ওপর জাতীয় নির্দেশিকা প্রস্তুতকারী অধ্যাপক ড. কাজী তরিকুল ইসলাম।