বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল বলে উল্লেখ করায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিন্দা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের গডফাদার”
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকায় আয়োজিত সেমিনারে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি। এ সময়, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দুর্গাপূজার পর তার দলের নেতা-কর্মীদের সাহস নিয়ে রাজপথে নামার আহ্বান বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, “১৫ বছরে আমাদের কয়েক হাজার সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে; বহু লোককে গুম করা হয়েছে, ৫০ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিএনপির ৭৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে সরকার।”
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারকে অপসারণ করতে না পারলে জাতি, দেশ ও স্বাধীনতার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে, তাই আমাদের এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই, সর্বস্তরের জনগণ এবং বাম-ডান সব বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়েছে। এ কারণে, আন্দোলন সফল হবে বলে আমি আশাবাদী।
মির্জা ফখরুল বলেন, “শেষবারের মতো আমি সরকারকে বলতে চাই, আপনারা দয়া করে সম্মানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে পদত্যাগ করুন এবং একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।”তিনি বলেন, “পণ্যের দাম বৃদ্ধি নজিরবিহীন। সব দেশেই দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশে এই বৃদ্ধি অবিশ্বাস্য ও নজিরবিহীন। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। এর প্রধান কারণ সরকারের জবাবদিহির অভাব।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করায়, দেশের মানুষ ভোট ও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার হারিয়েছে।” মির্জা ফখরুল আরো বলেন, “তিনি (হাসিনা) গতকাল (১৯ অক্টোবর)) বলেছেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আপনি কী? আপনি সন্ত্রাসের গডফাদার ফাদার। আপনারা দেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। আপনি ক্ষমতায় থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ক্ষমতায় থাকতে চান।”
বিএনপি মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসী দল: শেখ হাসিনা
এদিকে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি বলেন, “বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল এবং মানুষ হত্যাকারী দল। তারা প্রতিদিন আমাদের পদত্যাগ চায় এবং আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের উৎখাত করে। এটা ভালো। তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে দিন।”
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিএনপিকে বিরোধী দল বলতে চান না, কারণ তাদের সংসদে কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দলই সংসদে আসন পায়।”
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আন্দোলনে সরকারের কোনো আপত্তি নেই। তবে জনগণের সুরক্ষার স্বার্থে সম্ভাব্য অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, “তারা আন্দোলন করলে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তাদের জনগণের কোনো ক্ষতি করতে দেয়া হবে না। আমি মনে করি এ ব্যাপারে আপনাদের সবার কিছুটা হলেও সজাগ থাকা উচিত।”
শেখ হাসিনা বলেন, এটা ভালো যে বিএনপি-জামায়াত এখন আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, “তারা যদি বাসে আগুন দিতে যায়, তাহলে আমি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা-সহ সবাইকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলেছি, যাতে তারা জনগণের কোনো ক্ষতি করতে না পারে এবং অগ্নিসংযোগ করতে না পারে।”