গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মানবিক যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জোরদার হয়েছে। তবে সম্ভবত এতে কোনো কাজ হবে না, কারণ ইতোমধ্যে হামাস ইসরাইলের উদ্দেশ্যে আরও রকেট ছুঁড়েছে এবং ইসরাইল প্রত্যুত্তরে গাজা উপত্যকায় হামাসের লক্ষ্যবস্তুগুলোতে বোমাবর্ষণের মাত্রা বাড়িয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক বৈঠকে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন প্রশ্ন তোলেন, “কিভাবে আপনি এমন একজনের সঙ্গে অস্ত্র বিরতিতে সম্মত হবেন, যিনি আপনাকে হত্যা ও অস্তিত্ব বিলীন করে দেওয়ার সংকল্প নিয়েছে? কিভাবে?।” হামাস-ইসরাইল সংঘাত নিয়ে আয়োজিত এই বৈঠকে বেশ কিছু দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একযোগে হামাসের হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে হবে।
তিনি বলেন, প্রত্যেক জাতির নিজ নিজ বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে একমত হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট (জো) বাইডেন এই সংকটের শুরু থেকেই যে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন, তা হল, ইসরাইলের নিজেদের প্রতিরক্ষা দেওয়ার অধিকার ও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারা কিভাবে এ বিষয়টি নিশ্চিত করছে, সেটা মুখ্য নয়।”
ব্লিংকেন আরও জানান, গাজার মানুষদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে হবে এবং বেসামরিক ব্যক্তিদের নিরাপদ রাখতে হবে।
ব্লিংকেন বলেন, “অর্থাৎ এসব কারণে মানবিক বিরতির বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।”
হামাসের হামলার পর ইসরাইলের প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর বড় আকারে দুর্দশা ও মৃত্যু নেমে এসেছে, যা এ অঞ্চলের জন্য নতুন কিছু নয়। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে, ইসরাইলি বোমাবর্ষণে ১৮ দিনে ৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যদের বলেন, “এই কাউন্সিলের কাছ থেকে আজ যে জরুরি সমাধান প্রয়োজন, তা হলো, এই মুহূর্তে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করে যুদ্ধ বিরতি চালু করতে হবে এবং জরুরি ভিত্তিতে গাজা উপত্যকার সব অংশে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।”
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান সাংবাদিকদের বলেন, মানবিক অস্ত্র-বিরতি জরুরি।
জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সাংবাদিকদের বলেন, “এটি (এই যুদ্ধ) একটি বাস্তব হুমকি। আমরা সবাই এটাকে থামানোর চেষ্টা করছি। পশ্চিম তীর থেকে লেবানন হয়ে সব ফ্রন্টে এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা কেউ সেটা চাই না।”
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।