বুধবার জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট একটি “নজিরবিহীন পর্যায়ে” পৌঁছেছে। এর একদিন আগে জাতিসংঘের প্রধানের এক মন্তব্যের কারণে ইসরাইল তাকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানায়।
জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তরের মুখপাত্র, দুজারিচ বলেন, “বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অনুমান, প্রয়োজনীয় খাদ্যের বর্তমানে যে সরবরাহ আছে তা দিয়ে আর বারো দিন চলা যাবে।”
গাজা উপত্যকায় প্রায় ২২ লাখ মানুষ বসবাস করে। জাতিসংঘের অনুমান, এদের মধ্যে ১৪ লাখের বেশি মানুষ ইসরাইলের শহর এবং নগরে হামাসের ৭ অক্টোবরের মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলার পরে শুরু হওয়া সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
এরপর থেকে ইসরাইল গাজায় হামাসের স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করছে এবং হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকা অবরোধ করে রেখেছে। দুই সপ্তাহের আন্তর্জাতিক আলোচনার পর শনিবার গাজায় সীমিত পানি,খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহের অনুমতি দেয়া হয়।
নিরাপত্তা পরিষদ ত্রাণ বিতরণে সহায়তা করার জন্য সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করতে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যর্থ হয়েছে। গত সপ্তাহে গাজাবাসীদের ত্রাণ প্রদানের জন্য দুটি পৃথক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে- একটি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে।
অনেক আরব দেশ উদ্বিগ্ন যে, দশলাখের বেশি গাজাবাসীকে সরিয়ে নেয়ার ইসরাইলের আদেশ তাদের নিজ ভূমি থেকে জোরপূর্বক স্থানান্তরের একটি প্রচেষ্টা।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস ২৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া বক্তব্যে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন,গাজাতে ইসরাইলের অবরোধ 'আন্তর্জাতিক মানবতা আইনের স্পষ্ট লংঘন'।
এদিকে মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘের প্রধানের করা মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হওয়ার পর ইসরাইল বলেছে, তারা জাতিসংঘের সাথে তাদের সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করছে।
গুতেরেস বারবার দৃঢ়ভাবে হামাসের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করেছেন। তিনি জঙ্গিদের হাতে বন্দি দুইশো জনের বেশি পণবন্দিকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই আক্রমণ যে “হাওয়া থেকে হয়নি” তা স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ।