অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

সতর্ক থাকুন, আগামী নির্বাচন যাতে বানচাল না হয়: নাগরিক সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা


বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে কেউ বানচাল করতে না পারে; বা প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে, সেজন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বেলজিয়ামের ব্রাসেলস-এ এক নাগরিক (কমিউনিটি) সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা, বেলজিয়ামের আর্টস থিয়েটার 'ইস্পেস লুমেন'-এ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার হোটেল থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের বেলজিয়াম শাখা এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। এতে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন আসন্ন। কেউ যাতে নির্বাচন বানচাল করতে না পারে; বা প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।” তিনি গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অর্জিত উন্নয়ন ও সাফল্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে, সরকারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তাতে কান না দিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, “যেহেতু নির্বাচন আসন্ন, তাই বাংলাদেশের বিগত ১৫ বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরুন। আর, অপপ্রচারে কান দেবেন না।” অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, “তারা যদি আবার অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয়, তাহলে একজন মানুষও রেহাই পাবে না।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সরকার এখন রেমিট্যান্স প্রবাহে ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, “জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়ন পেয়েছে। তাই, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন।”

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেছে।আন্তরিকতা, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কারণে আমরা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।”

তিনি বলেন, “২৯ বছর মানুষ অন্ধকার ও দুর্ভোগের মধ্যে ছিলো। তাদের হাতে বাংলাদেশের কোনো ভবিষ্যত নেই এবং তারা বাংলাদেশের জনগণের কথা চিন্তা করে না।” শেখ হাসিনা, ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-সহ সকল সংগ্রামে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, “বাংলাদেশে কোনো চরম দরিদ্র থাকবে না, কারণ সরকার চরম দরিদ্রদের কষ্ট লাঘব করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”

কেবল আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল

এদিকে, ২৩ অক্টোবর এক সেমিনারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে কেবল আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “সরকার দেশে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে; যাতে, একমাত্র আওয়ামী লীগই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ সবসময় ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের জনগণ আবার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা দেশের সব রাজনৈতিক দল এক দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। কারণ আমরা এই সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন চাই।”

বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের জন্য সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, “জাতি এখন সবচেয়ে সংকটময় সময় পার করছে। আমাদের দলের তিন সাবেক সংসদ সদস্যসহ প্রায় ৭০০ জনকে গুম করা হয়েছে। আমাদের ৪৫ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলার মুখোমুখি করা হয়েছে। আমাদের অনেককে নির্বাচনের আগে সাজা দেয়া হচ্ছে, যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার দেশে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে; যেখানে একমাত্র আওয়ামী লীগই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে এবং বিরোধী দলগুলোকে ভোটদান থেকে দূরে রেখে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে।”

XS
SM
MD
LG