বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পাঞ্চল গাজীপুরে, কয়েক দিনের বিক্ষোভের পর শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। এর কিছুক্ষণ পর, কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আবার বিক্ষোভ করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
অপ্রীতিকর ঘটনা ও সহিংসতা এড়াতে, সকাল থেকেই শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়তি সদস্য মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যেই, শনিবার সকালে সদর উপজেলার নতুন বাজার এলাকার বেতন বাড়ানোর দাবিতে কিছু শ্রমিক আবার বিক্ষোভ শুরু করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে।
এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় শ্রমিকদের নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে গাজীপুর শিল্প পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদ বলেন, “আমরা প্রথমে শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিদর্শক আবদুর নুর ও আমি আঘাত পাই।”
পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, “গাজীপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ঠেকাতে ৩ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। শ্রমিক অসন্তোষ ও সহিংসতার পর, শনিবার সকাল থেকে অধিকাংশ কারখানা খোলা হয়েছে। সেখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ চলছে। গত কয়েকদিনের সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের ও বেশ কয়েকজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর থেকে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। সে সময় বেশ কিছু এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে গাড়ি ভাঙচুর; কারখানায় ও শপিংমলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ অবস্থায় শিল্প এলাকার অধিকাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
পরে, শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে সরকার, মালিক, বিজিএমইএ, শ্রমিক সংগঠনের নেতারা আলোচনায় বসেন। গঠন করা হয় মজুরি বোর্ড। সভায়, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে নভেম্বর মাসে ঘোষণা ও ডিসেম্বর মাস থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর শনিবার থেকে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমইএ। সিদ্ধান্ত মেনে গাজীপুরে অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকেরা।