বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগ করার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বিএনপি ও জামায়াতের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভায় দেয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “ভোটের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।” ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সব দলকে আহ্বান জানান তিনি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “জামায়াত-বিএনপি অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করেছে এবং জানমালের ক্ষতি করেছে। তাই আমরা চাই তারা জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে তারপর নির্বাচনে আসুক। নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।”
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিরও চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আসুন নির্বাচনে অংশ নিন। জনগণের কাছে যান এবং জনগণের কাছে আপনাদের ভোট দিতে বলুন।”
অগ্নিসংযোগের ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে যথাসময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায়, নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। সময়মতো নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। বলেন, “জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্য এই নির্বাচন।”
তিনি আরো বলেন, “আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো; এই স্লোগান দিতে দিতে আপনারা ভোট দিতে যাবেন।” শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন সবাই এর সুফল পাচ্ছে। তিনি বলেন, “আশা করি আমরা তরুণদের সহযোগিতা পাবো “
নির্বাচনকে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচনের সময় এসেছে এবং জনগণ ভোট দেবে। কারো সাহস থাকলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। জনসমর্থন থাকলে তারা ভোট পাবে।যে দল জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারাই সরকার গঠন করবে।”
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “তারা (বিএনপি-জামায়াত) জনগণের ওপর আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়ে হামলা চালাচ্ছে।”
এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিএনপির পক্ষে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “আমরা চরম ঘৃণার সঙ্গে তফসিল প্রত্যাখ্যান করছি।” রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে সমগ্র জাতিকে উপহাস করেছেন।”
এছাড়া, তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে রবিবার (১৯ নভেম্বর) থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন। বিএনপির সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোও অনুরূপ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, “রবিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীকে মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে তারা হরতাল পালন করবেন।