গাজার শিফা হাসপাতাল থেকে অন্তত ৩১টি প্রিম্যাচিউর শিশুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এই নবজাত শিশুদেরকে মিশরের চিকিৎসাকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হবে।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বলছে, “আজ পিআরসিএসের জরুরী চিকিৎসা সেবা দলগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয় কেন্দ্রের (ওসিএইচএ) সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগে সফলভাবে ৩১টি প্রিম্যাচিউর শিশুকে” হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।
হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে ইসরাইলি বাহিনী এই হাসপাতালে হামলা চালায়।
শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটি দল সরেজমিনে শিফা হাসপাতাল পরিদর্শন করে জানায়, সেখানে প্রায় ৩২টি শিশু রয়েছে যাদের সেবা প্রয়োজন।
দলটি হাসপাতালে এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করে জানায়, “এক সময় যেটি ছিল গাজার সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে আধুনিক ও সবচেয়ে ভালো উপকরণ ও সরঞ্জামে সজ্জিত হাসপাতাল” তা আজ এক “মৃত্যুপুরী”।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী তাদের আগের দাবী অনুযায়ী এখনো শিফা হাসপাতালের নিচে হামাসের ভূগর্ভস্থ কমান্ড সেন্টারের খোঁজ করছে—হাসপাতালের কর্মী ও হামাস এই দাবি অস্বীকার করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শনিবার শিফা হাসপাতালে জাতিসংঘের যৌথ মানবিক অভিযানে নেতৃত্ব দেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে বলছে, ২৯১ রোগীর সেবায় মাত্র ২৫ জন চিকিৎসাকর্মী নিয়োজিত ছিলেন। রোগীদের মধ্যে ৩২টি শিশুও আছে। রোগীরা “অত্যন্ত আশংকাজনক অবস্থায় আছে। ২ জন রোগী ভেন্টিলেশন ছাড়াই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে আছেন এবং আরও ২২ জন ডায়ালাইসিস রোগী আছেন।” বেশিরভাগ রোগী গুরুতরভাবে আঘাতের শিকার, বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, তারা বাকি রোগী ও চিকিৎসাকর্মীদের আগামী ১ থেকে ৩ দিনের মধ্যে দক্ষিণ গাজার নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স ও ইউরোপীয় গাজা হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য কাজ করছে।
এপি জানিয়েছে, এর আগে শনিবার বেশিরভাগ রোগী, কর্মী ও বাস্তুচ্যুত মানুষ শিফা ছেড়ে গেছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষায়, এ সময় ইসরাইলি বাহিনী তাদের তল্লাশি করেন ও মুখচ্ছবি স্ক্যান করেন, যা আতংক ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।
মাহমুদ আবু আউফ এপিকে ফোনে বলেন, “আমরা বন্দুকের নলের মুখে (সে জায়গা) ছেড়ে আসি”। “ভেতরে ও বাইরে, সর্বত্র ট্যাংক ও স্নাইপার ছিল”। তিনি ইসরাইলি বাহিনীকে ৩ ব্যক্তিকে আটক করতে দেখেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
ভয়েস অফ আমেরিকার জাতিসংঘ সংবাদদাতা মার্গারেট বেশির এই প্রতিবেদনে কাজ করেছেন। এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স ও এএফপি থেকে নেওয়া হয়েছে।