আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন যে বিএনপি হচ্ছে সবচাইতে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দল। তারা যদি মানবাধিকারের কথা বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তবে জনগণ তাদের উপযুক্ত জবাব দেবে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, “দেশে বিএনপিই প্রথম মানুষের অধিকার হরণ করা দল। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মানুষের রক্তের ওপর দাঁড়িয়েই ক্ষমতা দখল করেছিলেন।”
তিনি আরো বলেন, “জিয়াউর রহমানই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “১৯৭৭ সালে সেনা ও বিমান বাহিনীর অফিসারদের বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। এর পর, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানো, সব করেছে বিএনপি-জামায়াত। এগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপি-জামায়াত এখনো অবরোধ-হরতালের নামে মানুষ, যানবাহন ও সহায়-সম্পত্তিতে হামলা, গাড়ি পোড়ানোর কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এগুলো সন্ত্রাসী কাজ, মানুষকে জিম্মি করার দেশবিরোধী অপতৎপরতা।”
“শিল্পী সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে এদের মোকাবেলা করতে হবে, মানুষকে জাগাতে হবে। মানবাধিকার নিয়ে বিশৃঙ্খলা করা হলে জনগণ তাদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে;” বলেন হাছান মাহমুদ।
রিজভী: ‘কারাগারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন বিএনপি নেতারা’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে তাদের দলের বন্দী নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন করা হচ্ছে, সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এবং তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
শবিবার (৯ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করতে, বিএনপির সকল বন্দীদের সব ধরনের সাধারণ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার জন্য আইজি প্রিজন মৌখিকভাবে সব কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।”
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আইজি প্রিজন কারাবন্দী বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন ও অধিকার লঙ্ঘিত করে, দেশের কারাগারগুলোকে হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছেন। নির্যাতনের কারণে কারাগারে থাকা বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন বিপাকে পড়েছেন।”
রিজভী দাবি করেন, কারাবন্দী বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারাগারের ভেতরের কক্ষ থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। এমনকি, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে, তাদের জন্য জামাকাপড় দিতে এবং ফোনে কথা বলতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কারাগারগুলো এখন বিএনপির নেতা-কর্মীদের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে; কারাগারগুলো এখন আর প্রকৃত সামাজিক অপরাধীদের জায়গা নয়। তিনি (শেখ হাসিনা) সেখানে ফ্যাসিবাদের নিপীড়নের সমস্ত পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। জেলখানায় তিনি (শেখ হাসিনা) তার আদর্শে অনুপ্রাণিত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, “শেখ হাসিনা চান বিএনপি নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তারের আগে বাইরে যেমন হয়রানি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, কারাগারেও যেন তারা তেমনি নির্যাতিত হন।”
রিজভী বলেন, “কারাগারের ভেতরে ভয়াবহ নিপীড়ন চলছে। এই নিপীড়ন নজিরবিহীন। অতিমাত্রায় উৎসাহী কর্মকর্তারা আমাদের দলের বন্দীদের বিরুদ্ধে এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।”
বন্দীদের ওপর এ ধরনের নির্যাতনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী। একই সঙ্গে বন্দীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রাক্কালে, রাজধানীর শাহবাগ থেকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের তাড়িয়ে দেয়া এবং জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশে বাধা দেয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, “জোরপূর্বক গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা এখন নিজেদের পক্ষে কথা বলতে পারেন না। গুম, ক্রসফায়ার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এই সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এমনভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়, যাতে তাদের অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে না পারে।”