ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশটির সমস্ত লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তার এ বক্তব্যের পরে মঙ্গলবার ইসরাইলের বাহিনী গাজা ভূখণ্ডের একাধিক অংশে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে।
এদিকে ইসরাইলের সেনাপ্রধান হারজি হালেভি হামাস প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বলেন, “সন্ত্রাসী সংগঠনকে অবলুপ্ত করার কোন সহজ পথ নেই”।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা একশোটির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে টানেল শ্যাফট এবং সেই সব স্থান যা হামাস জঙ্গিরা ইসরাইলের বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ সংগঠিত করার জন্য ব্যবহার করেছে।
বাসিন্দারা গাজার মধ্যাঞ্চলে নুসিরাত, মাগাজি এবং বুরেইজ শরণার্থী শিবির এলাকায় বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণের কথা জানিয়েছেন।
নেতানিয়াহু সোমবার তার লিকুদ পার্টির সদস্যদের সামনে এক মন্তব্যে বলেছেন, জঙ্গি গোষ্ঠীর হাতে আটক বাকি জিম্মিদের মুক্ত করতে হলে ইসরাইলকে হামাসের ওপর সামরিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
নেতানিয়াহু ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে সম্পাদকীয়তে একটি রূপরেখা দিয়েছেন। তিনি তার সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, হামাসকে অবশ্যই ধ্বংস করতে হবে, গাজা ভূখণ্ডকে অবশ্যই নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে এবং ফিলিস্তিনি সমাজকে অবশ্যই উগ্রবাদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরাইল গাজায় স্থল অভিযান এবং হাজার হাজার বার বিমান হামলা চালিয়েছে, গাজার বিস্তীর্ণ অংশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। হামলায় এ পর্যন্ত ২০,৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
যুদ্ধে গাজার ২৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অনেকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে ভিড়ের মধ্যে নিরাপত্তা খোঁজার চেষ্টা করছে।
সোমবার মিশর একটি যুদ্ধবিরতি, পর্যায়ক্রমে জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজা ভূখণ্ড ও পশ্চিম তীরের প্রশাসনের জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি ফিলিস্তিনি সরকার গঠনের মাধ্যমে বর্তমান সংঘাতের অবসান ঘটানোর একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে। মিশরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং ঘটনার সাথে পরিচিত একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক একথা জানিয়েছেন।
ইসরাইল এবং হামাস প্রাথমিক প্রস্তাব সম্পর্কে শীতল আচরণ করলেও পুরোপুরি এটিকে নাকচ করে দেয়নি। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতার মধ্যে থাকা দুটি পক্ষের মধ্যে কূটনীতির নতুন একটি পর্বের সম্ভাবনা উন্মুক্ত হয়েছে।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি,এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।