বাংলাদেশের বরিশালে, শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভাস্থলে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে সিরাজ সিকদার (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২৫ জন।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের মুহূর্তে জনসভা মঞ্চে উঠছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
নিহত সিরাজ সিকদার বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকাল সাড়ে ৩টায় বরিশাল-৪ নির্বাচনী এলাকার ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের বিপুল সংখ্যক সমর্থক, শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে আসে।
সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলো একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া, দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ এর অনুসারীরা।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বাতিল হওয়া মনোনয়ন ফিরে পেতে, বর্তমানে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াইয়ে আছেন শাম্মী আহমেদ ।
সমাবেশস্থলের প্রবেশ পথে আনসার ক্যাম্পের সামনে দু’পক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সিরাজ সিকদার নিহত হন; আর আহত হন দু’পক্ষের অন্তত ২৫ জন।
আহতদের মধ্যে ১৩ জনকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, নিহত সিরাজ সিকদারকে এমপি পঙ্কজ ও শাম্মী আহমেদ , দুজনেই নিজের কর্মী বলে দাবি করেছেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর জনসভায় যোগ দিতে তার সঙ্গেই লঞ্চে করে বরিশালে এসেছেন বলে জানান পঙ্কজ দেবনাথ।
তিনি বলেন, “আমরা সবাই একসঙ্গে এসেছি। জনসভা মাঠে ঢোকার সময় আমার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়।”
পঙ্কজ দেবনাথ জানান যে সিরাজ সিকদার শুরু থেকেই তার কর্মী এবং নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের পক্ষে কাজ করছিলেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শাম্মী আহমেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে, এ বিষয়ে কথা বলেছেন তার অনুসারী আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সৈয়দ মুনির।
মুনির বলেন, “সিরাজ সিকদার আমাদের কর্মী। হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিপু সুলতানের সঙ্গে তিনি বরিশালে এসেছিলেন।”
সমাবেশস্থলে ঢোকার সময় সিরাজ সিকদার এবং তাদের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয় বলে জানান সৈয়দ মুনির।
শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান তুহিন জানিয়েছেন, সিরাজ সিকদারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।
ময়না তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান ডা. তুহিন।