অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশ নির্বাচন: ভোটে থাকতে পারছেন না শাম্মী আহমেদ ও সাদিক আবদুল্লাহ


বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট
বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক) প্রার্থী শাম্মী আহমেদ। আর, বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ'র প্রার্থিতা বাতিল আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্ট।

শাম্মী আহমেদ ক্ষমতাসীন আ্ওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক; আর সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল নগরের সাবেক মেয়র এবং তিনিও আওয়ামী লীগের রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব।

বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ তার প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল আবেদন করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

শুনানির জন্য নির্ধারিত দিনে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ফলে শাম্মী আহমেদ দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

এদিকে, বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহও তার প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন করেছিলেন। আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ, তার প্রার্থিতা বাতিল আদেশ বাহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার জন্য শাম্মী আহমেদের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে, গতবছরের ২৬ ডিসেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার বিচারপতির আদালত শুনানির ২ জানুয়ারি দিনধার্য করেন। তারই ধারাবাহিকতায় শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

আদালতে শাম্মী আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমাযুন, মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, শাহ মঞ্জুরুল হক, মোতাহার হোসেন সাজু এবং আরো ডজনখানেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।

গত ১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল হয় বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদের। পরে ১৮ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদ রিট করলে, তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শাম্মী আহমেদ।

গত ১৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে করা শাম্মী আহমেদের রিট খারিজ করে, হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত।

পরে ২২ ডিসেম্বর সকালে প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবার আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেন বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ।

ওই দিন শাম্মীর আইনজীবীরা চেম্বার আদালতে বলেন, “শাম্মী আহমেদের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন গ্রহণ করেছে অস্ট্রেলিয়া। সবদিক বিবেচনা করে শাম্মী আহমেদকে নির্বাচনের মাঠে থাকার সুযোগ দিন।”

তখন চেম্বার বিচারপতি বলেন, “আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপনারা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। এসব বিষয়ে তো আমি একা সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। আগামী ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সব বিচারপতি মিলে শুনবো।”

এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে, দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহিদ ফারুক।

গত ১৫ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন ভবনে আপিল শুনানি শেষে বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সিটির সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র প্রার্থিতা বাতিল করে ইসি। পরে এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সাদিক আব্দুল্লাহ।

তার করা রিটের শুনানি নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। ফলে সাদিক আবদুল্লাহর মনোয়নপত্র বৈধতা পায়।

পরদিন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন জাহিদ ফারুক। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতির আদালত।

এর ফলে, সাদিক আব্দুল্লাহর নির্বাচন আটকে যায়। পরে সাদিক আব্দুল্লাহ চেম্বার বিচারপতির দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। যে আবেদনের ওপর ২ জানুয়ারি শুনানি নেন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ এবং আবেদন খারিজ করে দেন।

XS
SM
MD
LG