আসন্ন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন সম্মেলনের ফাঁকে, মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলাচনা করবে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
হাছান মাহমুদ বলেছেন, উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় আসন্ন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (নন অ্যালায়েন্ড মুভমেন্ট-ন্যাম) সম্মেলনের ফাঁকে তিনি মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “দেখুন, আমরা সবসময় কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা করছি। আমরা তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছি।”
“আমি ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে যাচ্ছি। আমার মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমরা কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি; যোগ করেন ড. মাহমুদ।
জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৯তম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে উগান্ডার উদ্দেশে রওনা দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসি, আগামী ১৯ থেকে ২০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) প্রাথমিকভাবে শুরু হওয়া শীর্ষ সম্মেলনের জন্য বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশের নেতারা উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় সমবেত হয়েছেন। বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের নেতারা সপ্তাহব্যাপী এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির সরকার গত বছর প্রায় এক হাজার শরণার্থী নিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চেয়েছিলো।
বাংলাদেশ মিয়ানমারকে তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গার একটি তালিকা দিয়েছে এবং পরিবারগুলো যেন বিচ্ছিন্ন না হয় তাও নিশ্চিত করতে চেয়েছিলো।
বাংলাদেশ সরকার বলছে, একদিকে এই নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে; অন্যদিকে প্রতি বছর আশ্রয় শিবিরে প্রায় ৩০ হাজার নবজাতক জন্মগ্রহণ করছে। যা এই সংকটকে আরো জটিল করে তুলছে।
নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে আরো বিলম্ব এবং মানবিক সহায়তার ঘাটতি পুরো অঞ্চলকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে বলে মনে করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এত দীর্ঘ সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
এ কারণে, যে আর্থ-সামাজিক, জনতাত্ত্বিক ও পরিবেশগত ব্যয় বহন করতে হচ্ছে, তা বাংলাদেশকে এক সীমাবদ্ধতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের নিরাপদ ও টেকসই উপায়ে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ও অধিকার রয়েছে।