অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক: রাজনৈতিক কারণে সংসদ সদস্যের সংখ্যা নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে


বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি।
বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে বা অজ্ঞতা থেকে সংসদ সদস্যের সংখ্যা নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এ কথা বলেন তিনি।

সংবিধানের ১২৩, ১৪৮ ও ৫৬ অনুচ্ছেদের ঊদ্ধৃতি দিয়ে আনিসুল হক বলেন, “যারা বলছেন এখন সংসদ সদস্য সংখ্যা ৬৪৮, তারা সংবিধানকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করছেন না। উদ্দেশ্যমূলক কিংবা রাজনৈতিক কারণে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য তারা এমন বক্তব্য দিচ্ছেন। আর যদি সেটা না হয় তাহলে, তাদের সংবিধানের এই সব অনুচ্ছেদ সমন্ধে সম্যক জ্ঞান নেই।”

আনিসুল হক বলেন, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিতরা এমপি হিসেবে শপথ নিলেও সংসদে তারা কার্যভার গ্রহণ করার পর থেকে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর ২৯ জানুয়ারি (২০২৪) পর্যন্ত একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ থাকায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিতরা ওই তারিখ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

আনিসুল হক জানান, ৩০ জানুয়ারি থেকেই নতুন সংসদ সদস্যরা এমপি হিসেবে সুযোগ-সুবিধা পাবেন। নতুন সংসদের অধিবেশন বসার পর একাদশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্যদের মেয়াদ শেষ হবে।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকার নয়াপল্টনে বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ মুহূর্তে একাদশ সংসদের ৩৫০ জন আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মোট ৬৪৮ জন শপথবদ্ধ এমপি রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সংসদ অধিবেশন ডাকলে দুই সংসদের সদস্যরাই তাতে যোগ দিতে পারেন। অথচ এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২৯ জানুয়ারি (২০২৪) একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়া অবধি এই অরাজকতা থাকবে। এটি একটি চরম সাংবিধানিক লঙ্ঘন। সংবিধান অনুসারে এটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ। এ জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতিও এ দায় থেকে মুক্ত নন। ফলে অবৈধ মন্ত্রিপরিষদের কোনো অন্যায্য আদেশ–নির্দেশ দেশের জনগণ মানতে বাধ্য নয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের ভোট রঙ্গ ও ভোট গণনা শেষ না হতেই ডামি এমপিদের নামে গেজেট করা, শপথ গ্রহণ, মন্ত্রিপরিষদের নাম ঘোষণা, মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণের মতো প্রক্রিয়া অভাবনীয় দ্রুততায় মাত্র চার দিনেই সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একাদশ সংসদের মেয়াদ আছে ২৯ জানুয়ারি (২০২৪) পর্যন্ত। সেই সংসদ ভেঙে না দিয়েই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্বাদশ সংসদের সদস্যরা অবৈধভাবে শপথ নিয়েছেন। ফলে দেশে এখন দুই সংসদের সংসদ সদস্য রয়েছেন।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘রাষ্ট্রপতি আগে সংসদ ভেঙে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে।’ সংবিধানের এই বিধানমতে, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি শুরু হওয়া একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২৯ জানুয়ারি। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেননি, সে কারণে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত একাদশ সংসদের যাঁরা সংসদ সদস্য ছিলেন, তাঁরা সংসদ সদস্য হিসেবে বহাল আছেন।

XS
SM
MD
LG