বাংলাদেশ থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্য ও চীন পর্যন্ত, সর্বত্র প্লাস্টিক দূষণকে গুরুত্বের সঙ্গে মোকাবেলার পরামর্শ দিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ইনার হুইলের( আই আই ডব্লিউ) প্রেসিডেন্ট ট্রিশ ডগলাস।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইনার হুইল ক্লাবের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ট্রিশ ডগলাস এখন ঢাকা সফর করছন। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) তিনি এই পরামর্শ দেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায়, বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণ, বিশেষ করে প্লাস্টিক দূষণকে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেন ট্রিশ ডগলাস।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, মানবাধিকার ও পথ শিশুদের উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার আহবান জানান।
চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিশ্বের শীর্ষ চার কার্বন দূষণকারী বলে উল্লেখ করেন আইআইডব্লিউর প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মতো একটি দেশ, দায়ী না হওয়া সত্ত্বেও এই বোঝা বহন করে যাচ্ছে।”
ট্রিশ ডগলাস বলেন, “আপনারা যদি যুক্তরাজ্যের দিকে তাকান, সবকিছুই প্লাস্টিকের মাধ্যমে দূষিত হচ্ছে। আমি যদি আমার শৈশবে ফিরে যাই, আমাদের কাছে প্লাস্টিক ছিলো না।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের সমুদ্র রুদ্ধ হয়ে আসছে... ডলফিন মরছে, মাছ বিষাক্ত হচ্ছে, সবকিছু দূষিত হচ্ছে। কারণ এটি পচনশীল নয়। এটা থাকবে চিরকাল, হাজার হাজার বছর ধরে ধাকবে। আমরা যদি এখনই বন্ধ না করি, তাহলে আমাদের সত্যিই অনেক সমস্যা হবে।”
পুরোনো অভ্যাসের অনুশীলন গ্রহের পক্ষে ভালো বলে উল্লেখ করেন ট্রিশ ডগলাস। তিনি বলেন, “কাচের বোতলের কথায় ফিরে আসা যাক। কারণ কাচের বোতল আমরা পুনরায় ব্যবহার করতে পারি, কিন্তু প্লাস্টিক, আমরা পারি না।”
তিনি বলেন, তিনি চান ইনার হুইল ক্লাবগুলো সৈকতের যত্ন নেবে, চারপাশে আবর্জনা পরীক্ষা করবে। প্রজাপতি বেঁচে থাকুক, ফুল ফুটুক।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চীনে নানা বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটছে বলে উল্লেখ করেন ট্রিশ ডগলাস। বলেন, ১৩৫ বছরে তারা এমন বৃষ্টি কখনো দেখেনি।
“পৃথিবী ডুবে যাচ্ছে, কারণ বর্ষা দীর্ঘ হয়েছে এবং এখন আরো তীব্রতর হয়েছে। যুক্তরাজ্য ভয়ংকর ঝড়ের সম্মুখীন হচ্ছে, আমরা আগে কখনো দেখিনি, আমরা উপভোগ্য গ্রীষ্ম দেখছি না;” বলেন ইন্টারন্যাশনাল ইনার হুইলের প্রেসিডেন্ট।
তিনি উল্লেখ করেন যে তুরস্কে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ চলছে, যা অবিশ্বাস্য এবং তীব্র। দেশটি জ্বলছে। “আমরা নিজেরাই নিজেদের হত্যা করছি। আমরা এই গ্রহকে হত্যা করছি;” যোগ করেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ৪০ লাখ শ্রমিক নারী এবং তারা গ্রাম থেকে এসেছন। একই সঙ্গে, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
“এটি খুবই ভালো কথা;” বলেন ইনার হুইলের প্রেসিডেন্ট। তিনি নারীর স্বাস্থ্য এবং সমাজে তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরেন।
“নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে আমার অবস্থান খুবই শক্ত। কোনোভাবেই এটা চলতে দেয়া উচিত নয়। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে;” বলেন তিনি।