বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন যে বাংলাদেশ ও কানাডা আরো সহযোগিতার ক্ষেত্র অনুসন্ধান করছে। আর, কানাডার হাই কমিশনার লিলি নিকোলস বলেছেন, বিকল্প কণ্ঠস্বর ও দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্ব নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাই কমিশনার লিলি নিকোলসের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৈঠকের পর হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “কানাডার সঙ্গে আমাদের চমৎকার, বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। তারা (কানাডা) এই সম্পর্ক বিস্তৃত ও সম্প্রসারণ করতে চায়।”
সাংবাদিকদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেন হাই কমিশনার লিলি নিকোলস। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বহুমুখী ও দীর্ঘদিনের সম্পর্ক নিয়ে তারা প্রথম ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন; তিনি উল্লেখ করেন।
কানাডার হাই কমিশনার জানান, বৈঠকে তারা সঠিক গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নাগরিক সমাজ ও বিকল্প কণ্ঠস্বরের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। “আর, বিকল্প কণ্ঠস্বর ও দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্ব ব্যাপক, আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি;” বলেন হাই কমিশনার নিকোলস।
“জনগণের সঙ্গে জনগণের শক্তিশালী সম্পর্ক, চলমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং একটি ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে সম্ভাব্য সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যার মাধ্যমে উভয় দেশের নাগরিকরা উপকৃত হতে পারে; উল্লেখ করেন লিলি নিকোলস।
হাই কমিশনার নিকোলস রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কানাডার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার একটি বৈশ্বিক ইস্যু এবং এটি আমেরিকা, ইউরোপ ও কানাডার আলোচিত ইস্যু। “আমরাও এ বিষয়ে কাজ করছি;” যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
আলোচনার বিষয় নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা গণতন্ত্রের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি; কারণ আমাদের গণতন্ত্রের সুষ্ঠু চর্চা করতে হবে। আমরা আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর মতামতকে মূল্য দেই।”
কানাডার হাইকমিশনার বলেন, “সম্ভাব্য সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে; যেগুলোর মাধ্যমে আমাদের উভয় দেশের নাগরিক উপকৃত হবে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে আদালতের রায় কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান হাছান মাহমুদ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, হাই কমিশনারের সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নেই, তবে তিনি ঢাকার অনুরোধ তার সরকারকে জানাবেন।
তারা দুই দেশের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক এবং দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আরো জোরদার করার উপায় নিয়ে কথা বলেছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মাহমুদ।
হাই কমিশনার লিলি নিকোলস বলেন, “আমাদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে; যার অনেকগুলো মাত্রা রয়েছে।”
উন্নয়ন-অংশীদারিত্বের বিকাশ নিয়েও কথা বলেছেন বলে জানান কানাডার হাই কমিশনার। আর, দুই দেশের সম্পর্ক, কি করে দুই দেশের যৌথ সহযোগিতার অনেক সুযোগ এনে দিয়েছে, তা নিয়েও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান লিলি নিকোলস।
তিনি বলেন, ভালো বন্ধু হিসেবে তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্ব, নাগরিক সমাজের অসাধারণ মূল্যবোধ এবং একটি প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজ সম্পর্কে খুব খোলামেলা কথা বলেছেন।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান তিনি। “রোহিঙ্গা সংকটে কানাডার অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার সুযোগ পেলাম;” বলেন কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস।