সোমবার ১২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে তামিলনাড়ু সরকার।
সোমবার তামিলনাড়ু রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে পাঠ করার জন্য তৈরি রাজ্যপালের ভাষণে কেন্দ্রের বঞ্চনার খতিয়ান তুলে ধরে রাজ্যে ক্ষমতাসীন ডিএমকে সরকার।
সেই কারণে ভাষণটি পাঠ না করে অধিবেশন কক্ষে ঢুকেই বেরিয়ে যান রাজ্যপাল এন রবি। রাজ্যপাল বিনা বাধায় বিধানসভা ছেড়ে গেলে বিধানসভার স্পিকার রাজ্যপালের ভাষণের বাকি অংশ পাঠ করেন।
রাজ্যের ডিএমকে সরকার এরপর রাজ্যপাল সভা ত্যাগ করা মাত্রই এক প্রস্তাব পাশ করে। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল এই বাজেট ভাষণ বিধানসভায় পাঠ করেছেন।
রাজ্যপাল এন রবি দাবি করেছেন তিনি ভাষণের শুরুতে লেখা তামিল দার্শনিক তিরুবল্লিবরের দুটি শ্লোক পাঠ করে ভাষণ থামিয়ে দেন। তারপর বলেন, "আমি বাকি ভাষণ পড়বো না। ভাষণে এমন অনেক কিছু লেখা আছে যে বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই।"
পুরো ভাষণ পাঠ না করার কারণ হিসাবে রাজ্যপাল এন রবি আরও অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, "আমি বারে বারে বলা সত্বেও অধিবেশনের শুরু ও শেষে জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়নি।" এই প্রসঙ্গে পরে স্পিকার বলেন, বিধানসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রথমে রাজ্য সঙ্গীত বাজানো হবে। সব শেষে বাজানো হবে জাতীয় সঙ্গীত। এদিনও সেটাই করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, তামিলনাড়ু রাজ্যকে প্রাপ্য রাজস্ব দিচ্ছে না মোদী সরকার।
তামিলনাড়ুতে অতীতে কোনও রাজ্যপাল ভাষণ পাঠ না করে ওয়াকআউট করেননি। রাজ্যপাল এন রবি-র সঙ্গে গত চার বছর যাবত বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের ডিএমকে সরকারের বিরোধ চলছে।
সোমবারের ঘটনায় রাজভবনের দাবি রাজ্যপাল ভাষণ পাঠ করেননি। অন্যদিকে, বিধানসভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যপাল পুরো ভাষণ পড়েছেন।
ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার ইস্যুতে বিজেপি বিরোধিতা লোকসভা নির্বাচনের আগে ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগে রাজধানী দিল্লিতে ধর্নায় বসেন কেরলের সিপিএম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া। একই ইস্যুতে দিল্লিতে ধর্নায় বসতে চলেছেন গত বছরের শেষে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি।
কর্নাটকের কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া দিল্লির ধর্নায় অভিযোগ করেন তার রাজ্য সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করলেও কেন্দ্র তার খুবই সামান্য অংশ ফেরত দিচ্ছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির রাজস্ব উত্তর ভারতে ব্যয় করছে কেন্দ্র।
সিদ্দারামাইয়ার এই অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংসদে অভিযোগ করেন, "কংগ্রেস উত্তর-দক্ষিণ বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিপজ্জনক কথা বলছেন।"
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সিদ্দারামাইয়ার বক্তব্যকে 'বিচ্ছিন্নতাবাদী' বলে মন্তব্য করেছেন।
কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা ইস্যুতে দক্ষিণী জোট গঠনের পরিকল্পনা করছেন দক্ষিণ ভারতের বাকি রাজ্যগুলিকে নিয়ে।
