রুশ বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির বিধবা স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনিয়া সোমবার তার স্বামীর কাজকে চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে বলেন, “আমাদের দেশের স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম অব্যাহত রাখব” এবং “আপনাদের আমার পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই”।
অনলাইনে দেওয়া এক ভিডিও বক্তব্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি ইঙ্গিত করে নাভালনিয়া বলেন, “ভ্লাদিমির পুতিন আমার স্বামীকে হত্যা করেছেন।” তিনি আরও বলেন, “অ্যালেক্সেই ও আমাদের নিজেদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আমরা করতে পারি, তা হল, আগের তুলনায় আরও বলিষ্ঠ ও মরিয়া হয়ে সংগ্রাম অব্যাহত রাখা।”
নাভালনির মৃত্যুর সঙ্গে ক্রেমলিনের জড়িত থাকার অভিযোগ মস্কো দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ জানান, এই অভিযোগ “একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়” এবং নাভালনির মৃত্যু নিয়ে তদন্ত চলছে।
রুশ কারাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, শুক্রবার খার্পে অবস্থিত আর্কটিক কারাগারে হেঁটে আসার পর নাভালনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং মারা যান। সেখানে তিনি দীর্ঘ কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন।
তার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানকারী তদন্তের ফল এখনো ঘোষণা করা হয়নি বলে জানান পেসকভ। নাভালনির মরদেহ কবে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে, সে বিষয়েও তিনি কিছু বলেননি। পুতিন নাভালনির মৃত্যু নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
নাভালনির মিত্ররা বলছেন তার মা লিউদমিলা নাভালনিয়াকে উত্তর রাশিয়ার একটি মর্গে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, লিউদমিলা নাভালনিয়া ও তার আইনজীবীদের “ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি” এবং “এক আইনজীবীকে বস্তুত বের করে দেওয়া হয়েছে।”
নাভালনির দল অভিযোগ করেছে, কর্তৃপক্ষ “সব সূত্র মুছে ফেলার জন্য” মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করছে।
অনেক রুশ নাগরিক মুক্ত রাশিয়া প্রতিষ্ঠার আলোকবর্তিকা হিসেবে নাভালনিকে দেখতেন। এই নেতার মৃত্যুতে তারা বড় ধরনের আঘাত পেয়েছেন।
আগামী মাসে রাশিয়ায় নির্বাচন হতে চলেছে। এই নির্বাচনের ফল অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত পুতিনের হাতে দেশ শাসনের ক্ষমতা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে। এরকম সময়ে এলো নাভালনির মৃত্যুসংবাদ।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স ও এএফপি থেকে নেওয়া হয়েছে।