বৃহস্পতিবার গাজা সিটিতে মানবিক সহায়তা চাইতে গিয়ে কমপক্ষে ১১২ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যুর ঘটনা শুক্রবার ব্যাপক আন্তর্জাতিক নিন্দার জন্ম দিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী এবং গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরাইলের গুলি বর্ষণের কারণে এই ফিলিস্তিনিরা নিহত হয়েছেন। ইসরাইল এর বিরধিতা করে বলেছে, অসংখ্য মানুষ একে অপরকে পদদলিত করেছে এবং পালিয়ে যাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো তাদের চাপা দিয়েছে।
গাজার হাসপাতালের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলে আল-নাবুসি ট্রাফিক সার্কেলে জনতার ওপর ইসরাইলি হামলার কথা জানিয়েছিলেন। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ত্রাণবাহী ট্রাক থেকে লোকজন আটা ও টিনজাত মালামাল নামানোর সময় ইসরাইলি সেনারা গুলি চালায়।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজার উত্তরাঞ্চলে তেমন কোন সহায়তা পৌঁছয়নি এবং ক্ষুধা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, দুর্ভিক্ষ আসন্ন।
প্রাথমিকভাবে ইসরাইলের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছিলেন যে, সেনারা গুলি চালিয়েছিল। কর্মকর্তারা বলেছেন, সেনারা ভেবেছিল ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোর দিকে ছুটে আসা লোকজন “হুমকির কারণ” হতে পারে।
তবে বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ পোস্ট করা এক ভিডিও বিবৃতিতে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ’এর একজন মুখপাত্র বলেন, লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে সেনারা কেবল “কয়েকটি সতর্কতামূলক গুলি ছুঁড়েছে”।
আইডিএফ প্রথমে আরও বলেছিল, “ধাক্কাধাক্কি, পদদলিত হওয়া এবং ট্রাকের চাপায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে।” হাগারি সেই কথারই প্রতিধ্বনি করে বলেন, ‘হাজার হাজার’ গাজাবাসী ত্রাণ বহরের ওপর নেমে এসেছিল।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অলিভিয়া ডাল্টন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে যাওয়ার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সংবাদদাতাদের বলেন, “সর্ব সাম্প্রতিক এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া দরকার।”
ডাল্টন গাজার উত্তরাঞ্চলের ঘটনাকে “অত্যন্ত ভয়াবহ এবং আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের” বলে অভিহিতকরেছেন। তিনি বলেন, প্রাণহানির ঘটনা “গভীর দুঃখের বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আরও মনে করি, এই ঘটনাটি গাজায় সম্প্রসারিত মানবিক সহায়তার প্রবেশের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্বকেই তুলে ধরছে।”
ভয়েস অফ আমেরিকার জাতিসংঘ সংবাদদাতা মার্গারিট বাশীর এই প্রতিবেদন তৈরি করতে সহায়তা করেছেন। এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি, এএফপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।