সরকার ঘোষিত নির্দেশিকা (গাইডলাইন) প্রয়োগ করায় পেট্রোলিয়াম জ্বালানির দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রবিবার (৩ মার্চ) বিকেলে সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছি ... যদি মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্দেশিকাটি প্রয়োগ করতে পারি, আমরা আশা করি দাম কমতে দেখব।”
নসরুল হামিদ জানান, সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে ডিজেলের দাম সমন্বয় করা। কারণ এই পেট্রোলিয়াম পণ্য থেকে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়।
তিনি বলেন, “এখন থেকে প্রতি মাসেই জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশীয় ভোক্তারা লাভবান হবেন।”
তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্থানীয় মূল্য বাড়বে বা কমবে এবং প্রতি মাসে সরকার এক মাস মেয়াদে এই দাম ঘোষণা করবে।”
উল্লেখ্য, ১ মার্চ (শুক্রবার) সারা দেশে পেট্রোলিয়াম জ্বালানির স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের জন্য একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ‘জ্বালানির মূল্য নির্দেশিকা’ জারি করেছে সরকার। মার্চ মাস থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কেরোসিন, ফার্নেস অয়েল, জেট ফুয়েল, সামুদ্রিক জ্বালানিসহ সব পেট্রোলিয়াম জ্বালানির দাম আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ করা হবে।
এদিকে নির্দেশিকা জারির পরপরই জ্বালানিসচিব মো. নুরুল আলম বলেছিলেন, এখনই (১ মার্চ থেকে) তা কার্যকর হবে না। “যেহেতু আমরা এখনো নির্দেশিকা কার্যকর করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাইনি, তাই আমাদের আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।”
তিনি ইউএনবিকে বলেছেন, “আশা করি আমরা শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাব এবং ১০-১২ দিনের মধ্যে এটি কার্যকর হবে।”
জ্বালানির মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর করতে চাইলে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে এক মাসের জ্বালানির দাম বিবেচনায় নিতে হবে। একটি গড় মূল্য নির্ধারণ করে এপ্রিল মাসের জন্য মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।
নির্দেশিকায় এ ধরনের নির্দেশনা সম্পর্কে জ্বালানিসচিব বলেন, বাংলাদেশে এ ধরনের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ একটি নতুন বিষয়। তাই এ নিয়ে মন্ত্রণালয় কিছুটা বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সঙ্গে বসব। যাতে সব বিভ্রান্তি দূর এবং নির্দেশিকাটি সবার কাছে পরিষ্কার করা যায়। বিপিসি সারা দেশে পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি ও বিপণনের জন্য রাষ্ট্রীয় সংস্থা।
যেকোনো পেট্রোলিয়াম জ্বালানির মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে, আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য, আমদানি কর, অগ্রিম আয়কর এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), পরিচালন ব্যয়, অর্থ, প্রশাসনিক এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ, বিপিসির মার্জিনসহ সমস্ত খরচ, ভ্যাট ও বিক্রয় এবং বিতরণ খরচ বিবেচনায় নেওয়া হবে এবং তারপর একটি মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
জ্বালানি বিভাগের একটি সূত্র জানায়, স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের সূত্র কার্যকর হলে অকটেনের দাম ডিজেলের দামের নিচে চলে যাবে।
এটি সরকারের জন্যও একটি বড় উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ডিজেলের চেয়ে অকটেনের দাম বেশি রাখতে চায়।