গ্রাম আদালতকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার ক্ষমতা দিয়ে ‘গ্রাম আদালত (সংশোধন) বিল, ২০২৪’ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী এম তাজুল ইসলাম বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন এবং তা পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট যাচাই কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ পাঁচ সদস্যের সমন্বয়ে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। কিছু ক্ষেত্রে, কোনো সদস্য অনুপস্থিত থাকলে আদালত কাজ করতে পারে না।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, কোনো সদস্যের অনুপস্থিতিতে বিতর্কিত কোনো বিষয়ে ভোট হলে এবং দুই পক্ষের পক্ষে সমান সংখ্যক ভোট পড়লে চেয়ারম্যানের ভোট পাওয়া দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
এছাড়াও, আগের আইনের কিছু উদাহরণে, ‘নাবালক’ শব্দ ছিল, খসড়ায় তা বাদ দিয়ে ‘শিশু’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
২০১৩ সালে, গ্রাম আদালত আইন সংশোধন করে, সরকার ৭৫ হাজার পর্যন্ত জরিমানা আরোপের অনুমতি দিয়েছিল।
২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর গ্রাম আদালতের জরিমানা করার ক্ষমতা ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘গ্রাম আদালত (সংশোধন) আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় আইনটি মঙ্গলবার সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
গ্রাম আদালত
গ্রামীণ এলাকায় স্থানীয় জনগণের ছোটখাটো বিরোধের দ্রুত ও সহজ নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার জন্য ১৯৭৬ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পরে, সেই অধ্যাদেশ বাতিল করে গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ প্রণয়ন এবং ২০১৩ সালে আইনের কিছু ধারা সংশোধন করা হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে ছোটখাটো বিরোধে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ধারণা ও প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে কাজ করে গ্রাম সরকার। একই সঙ্গে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য সহজ ও দ্রুত ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতেও গ্রাম আদালত কাজ করে। গ্রাম আদালত বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত একটি আধা-আনুষ্ঠানিক বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া।