ষড়ঋতুর বাংলাদেশে চৈত্র মাস মানে খরতাপ। ফাল্গুনের মৃদু শীত আর বাতাসের দোলা শেষ হতে না হতেই চৈত্র আসে তাপ ছড়াতে ছড়াতে। এটাই বাংলাদেশের আবহাওয়ার স্বাভাবিক চরিত্র। এ বছর আবহাওয়ার এই চরিত্রে খানিকটা ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে। চৈত্রমাসের প্রথম দিনেই বৃষ্টি হয়েছে।
তবে, ১৬ মার্চ এ বছরের চৈত্র মাস খানিক স্বভাবগত রূপ ফিরে পেয়েছিলো। সারা দেশেই গরম অনভূত হয়। চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের তিন জেলায় বয়ে যায় মৃদু তাপ প্রবাহ। ঐ দিন কক্সবাজার জেলায় বাংলাদেশের সর্বোচচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তারপর আবার থেমে থেমে বৃষ্টিপাত শুরু হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। তাপমান নামতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, উত্তরের জনপদ তেঁতুলিয়ায়।চৈত্রের প্রথম দিন তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ছিলো ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বৃষ্টির পূর্বাভাস
শুক্রবার (২৯ মার্চ) অধিদপ্তরের সকালের নিয়মিত বুলেটিনে, পরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে জানায় আবহাওয়া বিভাগ। বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে ফেনীতে; জানায় বাংলাদেশের আবহওয়া বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় মোংলায় এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায়।
এদিকে আবহওয়া সতর্ক বার্তায় বলা হয়, কুমিল্লা, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
২৩ মার্চের শিলাবৃষ্টি
রাজধানী ঢাকায় হঠাৎ কাল বৈশাখী শুরু হয় শনিবার (২৩ মার্চ) মধ্যরাতে। রাত সোয়া ২টা থেকে শুরু হয় এই ঝড়, চলে প্রায় ৩০ মিনিট। ঝড়ের সঙ্গে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়।
আবাহওয়া অফিস জানিয়েছিলো যে চলতি চৈত্র মাসে এটি ছিলো তৃতীয় ঝড়-বৃষ্টি।
ঝড়ের পর রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে প্রবাহিত হয় হালকা বাতাস। প্রকৃতিতে নেমে আসে শীতল অনুভুতি।
২৩ মার্চ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফ ও মোংলায় ৩৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চৈত্রের প্রথম দিনে বৃষ্টি
চৈত্রের প্রথম দিন ১৫ মার্চ থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। কখনো মাঝারি আকারে, আবার কখনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টিপাত হয় সারা দিন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ১৫ মার্চ জানিয়েছিলো যে চলতি মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে শিলা ও বজ্রবৃষ্টিসহ শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাবে।
বিশেষ লক্ষনীয় যে ঐ সময় বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস,পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায়।