অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ডব্লিউটিও’র নীতি অনুযায়ী শুল্ক কাঠামো সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ


বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)
বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতি অনুযায়ী, শুল্ক কাঠামো সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একটি সরকারি নথিতে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

এনবিআরের কৌশলের মধ্যে রয়েছে, দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতাকে এগিয়ে নেয়ার সময়, দেশীয় খাতের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে, একটি সতর্ক ভারসাম্যমূলক আইন প্রনয়ণ করা।

ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের শুল্ক কাঠামোর একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পর্যালোচনার জন্য ৬০ টি শুল্ক-সীমা চিহ্নিত করা হয়েছে।

পর্যালোচনায় অন্তর্ভুক্ত শুল্ক-সীমায় এখন যে আমদানি-রপ্তানি শুল্ক ও সংশ্লিষ্ট মাশুল রয়েছে, তা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) চুক্তিতে প্রতিষ্ঠিত নির্ধারিত হারকে ছাড়িয়ে গেছে।

প্রাথমিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ছয়টি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো হয়েছে। যা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাণিজ্য প্রক্রিয়াকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির ইঙ্গিত দেয়।

সরকারি নথি মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, ২০২৬ সালের মধ্যে ডব্লিউটিও-সম্মত নির্ধারিত শুল্কের মধ্যে আনা হবে বাংলাদেশের শুল্ক-সীমা। আর, ধীরে ধীরে শুল্ক হারগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ করার পরিকল্পনা করছে এনবিআর।

নির্ধারিত ট্যারিফ, সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ (এমএফএন) শুল্ক হারের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি এমন একটি সর্বোচ্চ সীমা, যা প্রয়োগ করা শুল্ক অতিক্রম করতে পারে না।

এই নিয়ন্ত্রক কাঠামো নিশ্চিত করে যে বাণিজ্য নীতিগুলো অনুমানযোগ্য এবং স্থিতিশীল; যা ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেয়।

সদস্য দেশগুলো সাধারণত ডব্লিউটিও-তে যোগদানের সময় বা পরবর্তী বাণিজ্য আলোচনার সময় বেধে দেয়া শুল্ক নিয়ে আলোচনা করে। আর, নীতির নমনীয়তা বজায় রাখতে, এই হার তাদের প্রয়োগ করা শুল্কের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করে।

তবে, যথাযথ সমন্বয় ছাড়া নির্ধারিত শুল্ক হার, ডব্লিউটিও-তে প্রতিশ্রুত হার অতিক্রম করলে, তা আন্তর্জাতিক বিরোধ এবং ক্ষতিপূরণের দাবির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশের পুনর্বিন্যাস প্রচেষ্টা, ডব্লিউটিও সদস্যদের মধ্যে বিরাজমান বিস্তৃত প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে।

চলমান প্রবনতায়, উন্নত, উন্নয়নশীল এবং রূপান্তরিত অর্থনীতিগুলো নির্ধারিত শুল্ক হারের সঙ্গে আমদানির অনুপাতকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে; যা বিশ্ব বাজারের স্থিতিশীলতা বাড়িয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশ সরকার ন্যূনতম আমদানি মূল্যের প্রয়োজনীয়তা দূর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নথি থেকে জানা গেছে। ইতোমধ্যেই, ৫৫টি আইটেম থেকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হার সরানো হয়েছে।

অন্যদিকে, ২০২৬ সালের মধ্যে অবশিষ্ট ১৩০ টি পণ্য থেকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হার পুরোপুরি বাদ দেয়ার কৌশলগত পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো, আমদানি প্রক্রিয়া সহজতর করা এবং আরো প্রতিযোগিতামূলক বাজার-পরিবেশকে উৎসাহিত করা।

নথিতে শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গির রূপরেখা দেয়া হয়েছে। এর কারণ হলো, স্থানীয় শিল্পকে বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা করা এবং রাজস্ব সংগ্রহ শক্তিশালী রাখা নিশ্চিত করা।

এনবিআরের কৌশলের মধ্যে রয়েছে দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতাকে এগিয়ে নেয়া এবং দেশীয় খাতের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়া।

কাস্টমস শুল্ক ব্যবস্থায় এই ক্রমবর্ধমান সমন্বয় এবং ন্যূনতম আমদানি মূল্য বিলুপ্তির এই পদক্ষেপের অর্থ হলো; বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় নিরবচ্ছিন্নভাবে তার অবস্থান সংহত করতে চায়।

XS
SM
MD
LG