বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি সমস্যা নয়, উদ্বেগের বিষয় হলো ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ। সোমবার (১ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নাটোর জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক, আহত দেওয়ান শাহিনকে সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দেখতে যান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কিছুকর্মী-সমর্থকের হামলায় দেওয়ান শাহিন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
“ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি করতে দেবে কি না, বুয়েট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। যে কারণে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলো, তারা দেখবে এমন পরিস্থিতি এখনো অব্যাহত আছে কি না এবং সে অনুযায়ী তারা সিদ্ধান্ত নেবে;” বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গয়েশ্বর রায় আরো বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা আরো খারাপ ছিলো। সেখানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মানিক ‘ধর্ষণের সেঞ্চুরি’ উদযাপন করেছিলেন। এটি জাতির জন্য কলঙ্কজনক। কিন্তু আওয়ামী লীগ এই লজ্জাকে অলংকার বলে মনে করে।
প্রশাসনের মদদে তারা বেপরোয়া আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, “ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নৃশংসতা চালিয়ে এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে পেশি শক্তি প্রয়োগ করে ক্ষমতায় আছে।”
আওয়ামী লীগকে একটি জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দল বলে উল্লেখ করেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায়। “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাড়া তারা রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে এবং তাদের বর্বরতার জবাব দিতে প্রস্তুত হতে হবে;” তিনি যোগ করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদ শোনার জন্য সরকার অপেক্ষা করছে। তিনি আরো বলেন, “এই সরকারের কাছে আমাদের কিছু আশা করার নেই। তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে তারা যা করছে, তা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে।
হাছন মাহমুদ: ‘বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না’
এদিকে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন যে বিরাজনীতিকরণের নামে বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না। সোমবার (১ এপ্রিল) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, বুয়েটে সবসময় ছাত্ররাজনীতি ছিলো। দেশের অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদ বুয়েট থেকে পাস করেছেন। তিনি বলেন, “একটা গোষ্ঠী নির্বাচন বর্জন করেছিলো এবং পরে বিদেশিদের মুখের দিকে তাকিয়েছিলো। বিশ্বনেতারা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর ফলে তাদের আশা পূরণ হয়নি। তারাই বুয়েটকে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে পুরো দেশকে বিরাজনীতিকরণ করতে চায়।”
“বুয়েটে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিলো। সেই ঘটনার বিচার হয়েছে। কিন্তু প্রগতিশীল রাজনীতি বন্ধের আড়ালে সেখানে নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে কি না, এখন তা খুঁজে বের করতে হবে;” যোগ করেন হাছান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে রাজনীতি করার অপরাধে বুয়েট ছাত্রকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করার ঘটনা ঘটেছে; এটি কোন ধরনের সিদ্ধান্ত, সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
“বুয়েটে সাধারণ ছাত্ররা যে আন্দোলন করছে, তাকে সম্মান জানাই। কিন্তু, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়ায় পরিণত করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না; বুয়েটে জঙ্গিবাদ ঢুকেছে কি না তাও দেখা দরকার; আরো বলেন হাছান মাহমুদ।
শিক্ষার্থীদের বিপথগামিতা থেকে বাঁচাতে সংস্কৃতি চর্চার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন হাছান মাহমুদ। বলেন, দেশে একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ দরকার। পাড়া-মহল্লায় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো দরকার। তাহলে শিক্ষার্থীরা বিপথে যেতে পারবে না।