অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ: বর্নভিটাকে ‘হেলথ ড্রিঙ্কস’ ক্যাটেগরি থেকে সরাতে হবে


বর্নভিটা। প্রতীকী ছবি।
বর্নভিটা। প্রতীকী ছবি।

বর্নভিটা এবং বর্নভিটার মতো একাধিক ব্র্যান্ডের পানীয়কে ‘হেলথ ড্রিঙ্কস’ ক্যাটেগরি থেকে সরানোর জন্য সকল ই-কমার্স সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

সম্প্রতি ভারতের মানি কন্ট্রোল বিভাগের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ই-কমার্স সংস্থাগুলোর পোর্টালে বর্নভিটা বা এ ধরণের পানীয়কে যাতে ‘হেলথ ড্রিঙ্কস’ বিভাগে না রাখা হয়, তার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

কেন এমন নির্দেশ

মানি কন্ট্রোল বিভাগের রিপোর্টে বলা হয়, সিআরপিসি অ্যাক্ট ২০০৫ এর সেকশন ১৪ এর আওতায়, ন্যাশনাল কমিশন অফ প্রোটেকশন ফর চাইল্ড রাইটস এক তদন্ত চালায়। সেই তদন্তে দেখা গিয়েছে, বর্নভিটায় মাত্রারিক্ত চিনি রয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সাধারণত এই ধরনের পানীয়তে যে পরিমাণ চিনি থাকা উচিত, সেই মাপকাঠি পেরিয়ে গেছে বর্নভিটা। এর আগে, ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’কেও কমিশনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিলো।

সেই সময় বর্নভিটা কোম্পানি জানিয়েছিলো, তাদের পানীয় বাচ্চাদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। এমনকী, যে সব উপাদান তারা ব্যবহার করছে, সে তালিকাও দেয়া হয়েছিল কোম্পানির পক্ষ থেকে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতে, বর্নভিটায় চিনির মাত্রা বিপজ্জনক। তাছাড়া এই পানীয়তে ক্ষতিকারক রং, বাড়তি কোকো ব্যবহার করা হয়েছে। এর পর, শুধু বর্নভিটা নয়; বর্নভিটা সহ আরো কিছু পানীয়কে আর হেলথ ড্রিঙ্কের তালিকায় রাখা যাবে না বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

গবেষণা বলছে, বর্নভিটার মতো হেলথ ড্রিঙ্ক চিনির ভাণ্ডার। এতে ভিটামিন, মিনারেলস থাকে ঠিকই; তবে, সুগার কনটেন্ট বা চিনির পরিমাণ এত বেশি যে তা শিশুর শরীরের জন্য বিষের সমতুল্য। প্রতি চামচে এত পরিমাণ চিনি শিশুর শরীরে প্রবেশ করে, যা পরবর্তী সময়ে নানারকম অসুখের কারণ হয়ে উঠতে পারে।

বর্তমান সময়ে শিশু বয়স থেকেই ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, লিভারের অসুখ দেখা দিচ্ছে। বেশিরভাগই ভুগছে ওবেসিটিতে। তার অন্যতম কারণ বাজারে জনপ্রিয় হেলথ ড্রিঙ্ক।

গরুর দুধ শিশুরা খেতে না চাইলে, এর নানারকম বিকল্প আছে। কিন্তু, বাবা-মা বিজ্ঞাপনী চমকে ভুলে বাজার থেকে হেলথ ড্রিঙ্ক কিনে আনেন। এতে লাভের বদলে ক্ষতি হচ্ছে বেশি; বলছে গবেষণা।

পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ২ চামচ বর্নভিটায় (২০ গ্রামে) সাড়ে সাতগ্রামের বেশি চিনি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রামে চিনি থাকে ৭৩ দশমিক ১ গ্রাম।

এদিকে, চিকিৎসকরা বলছেন, ৭ থেকে ১০ বছর বয়সের শিশুদের ২৪ গ্রামের (৬ চামচ) বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়। ৭ বছরের কম হলে ১৯ গ্রামের বেশি নয়, আর পাঁচ বছরের নীচের শিশুদের চিনি খাওয়া বিপজ্জনক।

বর্নভিটার প্যাকেটে লেখা থাকে প্রতি ১০০ গ্রামে চিনির মাত্রা ৭৩ দশমিক ১ গ্রাম। নিয়মিত এই ধরনের হেলথ ড্রিঙ্ক খেতে শুরু করলে ওবেসিটি, কার্ডিওভাস্কুলার রোগ, ডায়াবেটিস, ক্রনিক রেসপিরেটারি ডিজিজ ও ক্যানসারের মতো নন-কমিউনিকেবল রোগের (এনসিডি) ঝুঁকি বাড়বে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

XS
SM
MD
LG