অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশ: ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ, ঢাকায় এখনো ছুটির আমেজ


ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ।
ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ।

বাংলাদেশে শেষ হয়েছে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটি। কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। ছুটি শেষ হলেও, রাজধানী ঢাকায় এখনো ছুটির আমেজ। ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা ও শেয়ারবাজার খুলেছে।

ঈদুল ফিতরের আগে, শেষ কার্যদিবস ছিলো ৯ এপ্রিল। ঈদ ও বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছিলো ১০ এপ্রিল থেকে, শেষ হয় ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ এবং ৯ এপ্রিল দুদিনের ঐচ্ছিক ছুটি নিয়ে টানা ১০ দিন ছুটি কাটিয়েছেন।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) থেকে সব অফিস-আদালত শুরু হওয়ায়, কর্মস্থলে যোগ দিতে সকাল থেকেই ট্রেন, বাস ও লঞ্চে করে অনেকে ঢাকায় ফিরছেন। যাত্রীরা জানিয়েছেন, ফিরতি যাত্রায় কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। রাস্তা-ঘাট ফাঁকা থাকায় বাসযাত্রীরা নির্বিঘ্নে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকায় ফিরতে পেরেছেন।

সোমবার গাবতলী বাস টার্মিনালে তুলনামূলক কম ভিড় দেখা গেছে। নওগাঁ থেকে আসা এক যাত্রী জানান, সড়কে কোনো যানজট নেই। ঈদের ফিরতি যাত্রায় সড়ক পথে ভোগান্তি না থাকলেও ট্রেনে ছিলো উপচে পড়া ভিড়। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা এক্সপ্রেস, উত্তরাঞ্চলের একতা এক্সপ্রেস এবং অন্য প্রায় সব ট্রেনেই ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।

এদিকে, দক্ষিণাঞ্চল থেকে লঞ্চযোগে ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ বেড়েছে। বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেখা যায়, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সদরঘাটে ৭৮টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকায় এসেছে। ঘরে ফেরা মানুষের চাপ সামলাতে প্রায় সব লঞ্চ ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে ফের যাত্রী আনতে দ্রুত টার্মিনাল ত্যাগ করছে।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিটিএর কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, সকাল ৮টা পর্যন্ত ৭৮টি লঞ্চ ঢাকায় এসেছে। যেখানে গতকাল (১৪ এপ্রিল) একই সময়ে ৯১টি লঞ্চ রাজধানীতে এসেছে বলে জানান তিনি।

সোমবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ছিলো ফাঁকা। তবে ফেরির চেয়ে লঞ্চে যাত্রী বেশি পার হয়। যানজট ও ভোগান্তি না থাকায় স্বস্তিতে ফিরছে ঢাকামুখী যাত্রীরা। তবে লঞ্চ ঘাটে যাত্রীর চাপ কিছুটা বেশি দেখা যায়।

ঘাট তত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটের আগের পরিস্থিতি আর বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে অনেক পার্থক্য। সেতু চালুর আগে ঈদের ছুটি শেষে নদী পাড়ি দিতে আসা গাড়িতে ঘাট এলাকায় ৬-৭ কিলোমিটার যানজট হতো। এখন যানজট নেই, ভোগান্তিও নেই।

পুলিশ জানায়, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দৌলতদিয়া দিয়ে ৫২১টি বাস, ২৯২টি ট্রাক, ১ হাজার ৬১৭টি ছোট গাড়ি ও ১ হাজার ৫১৪টি মোটরসাইকেল নদী পাড়ি দিয়েছে।

ছুটির মেজাজে ঢাকা

ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি কাটিয়ে নগরবাসী রাজধানীতে ফিরতে শুরু করলেও, ঢাকা শহর এখনো ফেরেনি তার চিরচেনা রূপে। রাস্তার পাশের বেশিরভাগ দোকান,শপিং মল বন্ধ। সোমবার রাজধানীর রাস্তায় খুবই কম সংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে গেছে। ঢাকার অধিকাংশই রাস্তায় ফাঁকা।

সোমবার সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুললেছে। তবে, কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিলো কম। সকালে মালিবাগ, শান্তিনগর, গুলশান, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মিরপুর ও শাহবাগ এলাকায় স্বল্পসংখ্যক বাস ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. ইউসুফ বলেন, “এখনো শহরে উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছে। রাস্তায় কোনো যানজট বা বিশৃঙ্খলা নেই। রাজারবাগ এলাকা থেকে গুলশানে পৌঁছাতে মাত্র ৬ মিনিট সময় লেগেছে। অথচ অন্য সময় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট লাগে। এটি ঢাকাবাসীর জন্য সাময়িক স্বস্তি।”

ছুটিতে ঢাকার বাইরে যাওয়া সরকারি-বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের অনেকেই ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। ফলে, অফিস-আদালত, ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে; জানান এই বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা।

এদিকে স্কুল-কলেজ খুলবে আগামী সপ্তাহে। তারপর চিরচেনা রূপে ফিরে আসবে রাজধানী ঢাকা।

XS
SM
MD
LG