নাফ নদীতে মাছ ধরার সময়, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গুলিতে দুই বাংলাদেশি জেলে আহত হয়েছেন। রবিবার (২১ এপ্রিল) সকালে, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ দুইজন হলেন; শাহপরীর দ্বীপের মাঝেরপাড়ার মোহাম্মদ ইসমাইল ও মোহাম্মদ ফারুক।ফারুকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায়, রবিবার দুপুর ১টার দিকে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত জেলে ও তাদের স্বজনরা জানান, রবিবার সকালে মাছ ধরার জন্য ১০ জেলে নাফ নদীতে যান। এসময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী। এতে ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
জেলেরা দাবি করেছেন যে তারা বাংলাদেশের জলসীমায় ছিলেন। তার পরও, মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীবাহিনী গুলি ছুঁড়েছে বলে জানায় তারা।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা প্রণয় রুদ্র জানান, ফারুকের শরীরে তিনটি গুলি লেগেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গনি জানান, দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা তিনি শুনেছেন। “বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি;” বলেন তিনি।
বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে বিজিপি সদস্যরা
এদিকে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া অব্যাহত রেখেছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে আরো ১৩ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
চলতি বছরের ফেব্রয়ারির শুরুর দিক থেকে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে, দেশটির সরকারি বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, “বর্তমানে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর মোট ২৭৪ জন আশ্রয় গ্রহণ করে বাংলাদেশে অবস্থান করছে।”
“বৃহস্পতিবার টেকনাফের নাফ নদীতে নতুন করে আরো ১৩ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন;” যোগ করেন শরিফুল ইসলাম। পরে কোস্ট গার্ড, এই বিজিপি সদস্যদের বিজিবি নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন (১১ বিজিবি) সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে; জানান তিনি।
এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে বিজিপি, সেনা সদস্য ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাসহ মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ৩৩০ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাদের মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।