অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশে এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ঘাটতি, লোডশেডিং ১,৮৬৪ মেগাওয়াট


প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

বাংলাদেশে বিদ্যুতের ঘাটতি এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) দেশটিতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৮৬০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে।

গত সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯টায় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিলো ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট। তা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ জুড়ে লোডশেডিং অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে থাকে।

বিদ্যুতের উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে পার্থক্যের কারণে এই লোডশেডিং, বলছে সংশ্লিষ্ট কর্পক্ষ। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর আওতাধীন, ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টার (এনএলডিসি) এর তথ্য অনুযায়ী, রবিবার দুপুর ১২টায় লোডশেডিং পৌঁছায় ১ হাজার ৮৬৪ মেগাওয়াটে।

বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থার গ্রামীণ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মনে করেন, লোডশেডিংয়ের মাত্রা এনএলডিসির দেখানো হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাধাগুলো সবসময় তালিকাভুক্ত হয় না।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় থুব ঘন ঘন। আর, যেকোনো সমস্যা হলে, গ্রাহকদের দিনে ও রাতে, উভয় ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎ পেতে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা আরো বলেন, “স্থানীয় বিভ্রাট বিবেচনায় নিলে, লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ২ হাজার মেগাওয়াটের চেয়ে বেশি হতে পারে।”

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে, গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়ে গেছে।

এনএলডিসির রেকর্ডে আরো দেখা যায়, (শনিবার দিবাগত) রবিবার রাত ১টায়, ১ হাজার ৭৮৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে সকাল ৭টায় তা কমে ১৩ হাজার ১৯ মেগাওয়াটে নেমে আসে। আবার উৎপাদন ঊর্ধ্বমুখী হয়; লোডশেডিংয়ের পরিমাণও বেড়ে যায়।

স্বাভাবিক চাহিদা বাড়লে সন্ধ্যার ‘পিক আওয়ারে’ লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, দিনের চাহিদার পূর্বাভাস নির্ধারণ করা হয় ১৬ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট এবং সান্ধ্যকালীন চাহিদা ছিলো ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার তথ্যে দেখা যায়, প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট। এ কারণে, বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র; বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে; গ্যাস সংকটে পড়ে। আর, এ কারণে উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর গ্যাস চাহিদা রয়েছে, ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি। এই চাহিদার বিপরীতে রবিবার ১ হাজার ৪২৩ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।

XS
SM
MD
LG