দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, "আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।"
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, "আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।"
বিএনপির এই নেতা বলেন, "সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।"
ফখরুল বলেন, "তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই, কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি চলছে
বাংলাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে। সেই লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের ‘প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ’ অনুষ্ঠান ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে।
ধাপে ধাপে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর পৌনে একলাখ জনবল তৈরি করা হবে এ কর্মসূচির আওতায়।
হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে এখন মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন।
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবসের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে। আর যদি এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি তাহলে আরও অন্তত ৬ মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে।"
"মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়,” এমন ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।
এরপর ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তরুণেরা সংখ্যায় বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
তবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন।