যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রবিবার পানামার শীর্ষ নেতাদের বলেছেন, চীন পানামা খালের উপর “অগ্রহণযোগ্য” প্রভাব খাটাচ্ছে ও নিয়ন্ত্রণ করছে; এই পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে যুক্তরাষ্ট্র জলসীমায় তাদের প্রবেশাধিকার সুরক্ষিত করতে “প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে” বাধ্য হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, রুবিও পানামা সিটিতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেভিয়ের মার্তিনেজ-আচাকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প “প্রাথমিকভাবে বিবেচনা করেছেন যে পানামা খাল এলাকার উপর চীনের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের বর্তমান পরিস্থিতি” খাল বিষয়ক কর্মকাণ্ডের পক্ষে “একটা হুমকি।”
আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী ৮২ কিলোমিটার বিস্তৃত এই জলপথে চীনের অন্যায্য প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী ভাবছে, যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নিতে পারে বা রুবিওর মতামত সম্পর্কে মুলিনোর প্রতিক্রিয়া কী তা এই বিবৃতিতে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকার পানামাকে সমালোচনা করলেও মুলিনো সম্প্রতি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
পানামার নেতা বলেছেন, খালের মালিকানা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করা হবে না। ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে কিছু পানামাবাসী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। আমেরিকার খনন করা এই খালের মালিকানা ১৯৯৯ সালে পানামার হাতে চলে যায় এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সেই মালিকানা ফিরিয়ে দিতে ট্রাম্পের দাবিকে তারা জোরালোভাবে বিরোধিতা করছে।
রবিবার বৈঠক চলাকালে প্রায় দুশো মানুষ পানামার পতাকা নিয়ে পানামা সিটিতে মিছিল করেছে এবং চিৎকার করে স্লোগান দিয়েছে “মার্কো রুবিও পানামা ছাড়ুন,” “জাতীয় সার্বভৌমত্ব দীর্ঘজীবি হোক” এবং “এক ভূখণ্ড, এক পতাকা।”
ট্রাম্প ও রুবিও-র ছবি দেওয়া ব্যানার পুড়িয়েছে কেউ কেউ, তবে তারা যাতে প্রেসিডেন্টের ভবনে পৌঁছতে না পারে সে জন্য দাঙ্গা পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছে।
পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে রুবিও “এই গোলার্ধে অবৈধ অভিবাসন সংকট বন্ধ করতে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার গুরুত্বের উপরও জোর দিয়েছেন।”
পররাষ্ট্র দফতর আরও বলেছে, রুবিও মুলিনোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন “যুগ্ম প্রত্যাবাসন কর্মসূচিতে তার সহায়তার জন্য, যা দারিয়েন গ্যাপ দিয়ে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা হ্রাস করেছে।” উল্লেখ্য, দারিয়েন গ্যাপ একটা প্রত্যন্ত এলাকা, এখানে কোনও রাস্তা নেই। এটি মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাকে যুক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছতে অভিবাসন প্রত্যাশীরা এই পথ পাড়ি দেয়।