গাজায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বলেন যে জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার জন্য শিশুসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে অবিলম্বে ওই ছিঁটমহলের বাইরে আনার আরও পথের প্রয়োজন রয়েছে।
গাজা থেকে এক ভিডিও বার্তায় ড. রিক পিপারকর্ন বলেন,“ রাফাহ হয়ে মিশরে আরো রোগীকে পাঠানো উচিৎ, চিকিৎসার সুবিধার জন্য আমাদের আরও করিডরের প্রয়োজন রয়েছে। আর প্রথম যে করিডর আমরা চাই তা হলো পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে যাওয়ার ঐতিহ্যবাহী পথটি আবার খুলে দেওয়া। পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে রোগীদের গ্রহণ করতে হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রয়েছে।
পিপারকর্ন বলেন অস্ত্রবিরতি চুক্তির অধীনে গাজা থেকে প্রতিদিন ৫০ জন ফিলিস্তিনি রোগী ও তাদের সঙ্গীদের নিয়ে আসা যাবে । এ পর্যন্ত তারা প্রতিদিন ৩৯ জন রোগীর বেশি আর কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি। তিনি বলেন এই সংখ্যা অনেক বাড়াতে হবে কারণ কমপক্ষে ৫,০০০ শিশুসহ ১২,০০০ থেকে ১৫,০০০ রোগীকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। এই রোগীরা ট্রমা ও হৃদপিন্ডের রোগ এবং ক্যান্সারসহ অন্যান্য অসুখের শিকার।
পিপারকর্ন বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে হামাসের হামলার আগে গাজায় প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ জন রোগী ছিল যাদেরকে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের হাসপাতালে পাঠানো হতো প্রধানত হৃদপিন্ড জনিত রোগ ও ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধের প্রথম মাসগুলিতে প্রায় ৫,০০০ রোগীকে চিকিৎসার জন্য রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মিশরে এবং আরও কিছু লোককে অন্যান্য দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে গাজা ভূখন্ডের দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ চালানোর আগে মে মাসের গোড়ার দিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাহ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার পর এই সংখ্যা নাটকীয় ভাবে হ্রাস পায়। মে মাস থেকে মধ্য জানুয়ারিতে অস্ত্র বিরতি কার্যকর হওয়া পর্যন্ত ৫০০ জনেরও কম ফিলিস্তিনি রোগীকে উদ্ধার করা গেছে।
পিপারকর্ন বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বিশেষ ভাবে চিকিৎসা দেয়া খুবই কঠিন কাজ । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে গাজা ভূখন্ডের ৩৬ টা হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৮টা আংশিক ভাবে কাজ চালাচ্ছে । বেশ কয়েকটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অনেকগুলোতে মৌলিক সরবরাহ এবং পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই । জরুরি যন্ত্রপাতি ধ্বংস করা হয়েছে এবং সেখানে মাত্র একটি সিটি স্ক্যানার ও এম আর আই মেশিন গাজাতে অবশিষ্ট আছে।
পিপারকর্ন বলেন গাজায় ফিলিস্তিনিদের শারিরীক ও মানসিক ট্রমার জন্য স্বাস্থ্য পরিচর্যার প্রয়োজন অনেক বেশি। অস্ত্র বিরতির পর এই কয়েক সপ্তাহে ১৬ লক্ষ ফিলিস্তিনির স্বাস্থ্য পরিচর্যার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১০৫ ট্রাক চিকিৎসা সামগ্রী গাজায় নিয়ে এসেছে।