অধিকার বঞ্চিত মানুষদের উগ্রবাদিরা ব্যবহার করে, রীতিমতো মোক্ষম সুযোগ নেয় তাদের বঞ্চনার , তাদের নির্যাতনের। কাজেই রোহিঙ্গারা উগ্রবাদি, মিয়ান্মার সরকারের এ ধরণের ঢালাও অভিযোগে যে যৌক্তিক ভ্রান্তি রয়েছে সে সম্পর্কে বিশ্লেষকরা বলছেন যে প্রথমত সব রোহিঙ্গাই উগ্রবাদি বা সন্ত্রাসী নয় আর এদের একাংশ যে উগ্রবাদের দিকে ঝুঁকেছে সেটার জন্য ও তাদের প্রতি মিয়ান্মার সরকারের আচরণ অনেকখানি দায়ি । মিয়ান্মারে রোহিঙ্গারা কোন নবাগত জাতিগোষ্ঠি নয় । তাদের ইতিহাস দীর্ঘ দিনের এবং মিয়ান্মারের ইতিহাসে তাদের ভূমিকাও ছিল ইতিবাচক । এক সময় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং মিয়ান্মারের বৌদ্ধরা যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে।
রোহিঙ্গাদের সমস্যাকে কেবল মাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ঠিক হবে না কারণ বিষয়টির অন্যান্য দিক ও রয়েছে , বিশেষত জাতিগোষ্ঠিগত নিপীড়নের কারণেই যে রোহিঙ্গারা আজ এই দুর্যোগের সম্মুখিন সেই সত্যকে খাটো করে দেখার কোন কারণ নেই । বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে এই যে মিয়ান্মার কর্তৃপক্ষ যেমন রোহিঙ্গাদের ধর্মীয় পরিচয়কে বড় করে দেখছে , তেমনি রোহিঙ্গারাও কেবল মুসলমান হিসেবেই নিজেদের পরিচিতি তুলে ধরছে ।রোহিঙ্গাদের সমস্যাকে একটি ধর্মীয় সমস্যা হিসেবে দেখার ব্যাপারে মিয়ান্মার সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও একটা বড় রকমের সমস্যা রয়েছে। সে দেশের বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসী মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে এবং তা উগ্রবাদিদের জন্য একটা চারণ ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।