আফগান শান্তি প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে চার জাতি আলোচনা পাকিস্তান শুরু হয়েছে। এই আলোচনায় পাকিস্তান ছাড়া অর্ন্তভুক্ত রয়েছে আফগানিস্তান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। যদিও পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের মাঝে সামনে অগ্রসর হবার পথে স্পষ্ট মতপার্থক্য রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেন। তিনি বলেন- পুনর্মিলন প্রক্রিয়ার প্রাথমিক উদ্দেশ্য সমঝোতার টেবিলে তালেবান গ্রুপ গুলোকে আনা এবং এমন উদ্দীপনার প্রস্তার দেয়া যাতে তারা, রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরনে যে সহিংসতার পথ অবলম্বন করে তা থেকে সরে আসে। চারপক্ষীয় সমন্বয় গ্রুপ-সংক্ষেপে QCG এর প্রথম সভায় তিনি, আলোচনার যেকোন পূর্বশর্ত বিরোধীতা হিসাবে বর্ননা করে। এবং শান্তি সমঝোতায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে সামরিক ব্যবস্থার কথা বলেন আজিজ ।
আফগানিস্তানে বিগত বছরে তালেবান অভ্যুত্থানের সম্প্রসারণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে যে--আসন্ন বসন্তে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি আরও রক্তপাত ও অস্থিতিশীলতার দিকে ধাবিত হতে পারে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আজিজ বলেন, ইসলামাবাদ বৈঠকে আফগান সরকার ও তালেবান গোষ্ঠীর মধ্যে সরাসরি আলোচনার জন্য একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি এবং আফগান পুনর্মিলন প্রক্রিয়া সামগ্রিক দিক থেকে সংজ্ঞায়িত করাই লক্ষ্য।
পাকিস্তান বিশ্বাস করে, তালেবানদের উপর তাদের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উদ্বেগ বাড়িয়েছে। দেশ দুটি দীর্ঘ দিন ধরে তালেবান এবং অন্যান্য বিদ্রোহীদের সীমান্তে সহযোগিতা দেবার বিষয়ে একে অপরকে বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। তালেবান নেতারা ব্যাপক ভাবে কোয়েটা ও পেশোয়ার সহ আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের শহর ভিত্তিক বলে ধারণা করা হয়।
কিছু আঞ্চলিক বিশ্লেষক বলেছেন আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। পাকিস্তান-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক সাদ এম. খান সোমবার ভয়েস অফ আমেরিকার Deewa রেডিও কে জানান, এই আলোচনায় পাকিস্তানের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং তালেবানদের আলোচনার টেবিলে আনার যে ক্ষমতা আফগান সরকারের নেই, তা করতে পাকিস্তানকে অবশ্যই ভূমিকা রাখতে হবে।
সোমবারের আলোচনায় তালেবান অর্ন্তভূক্ত নয়। কিন্তু আফগানিস্তানে প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ’র মুখপাত্র জাভিদ ফায়সাল বলেছেন, পাকিস্তান সরকার শান্তি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তালেবান প্রতিনিধিদের একটি তালিকা প্রদান করবে।
তালেবানের সঙ্গে একটি আলোচনার পর, তালেবান নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমর আরো দুই বছর আগে মারা গিয়েছেন পাকিস্তান এমন ঘোষণা দিলে, আলোচনা ভেঙ্গে যায়। যে কারনে দ্বিতীয় বৈঠকটি আর হয়নি।
বিশ্লেষরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, কাবুল ও ইসলামাবাদের পুর্নমিলন প্রকিয়া সত্ত্বেও, যেকোন ধরনের বাস্তব শান্তি আলোচনা কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রতিনিয়ত তালেবান দাবি করে আসছে, আফগানিস্তান থেকে আর্ন্তজাতিক সৈন্য সরিয়ে নেবার। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ১৩ হাজার সেনা মোতায়েন আছে। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে নয় হাজার আটশো সেনা।