অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলা গানের বিবর্তন ,দ্বিতীয় পর্ব : অঘোরনাথ ও গওহরজান প্রসঙ্গ


বাংলা গানের বিবর্তন ,দ্বিতীয় পর্ব : অঘোরনাথ ও গওহরজান প্রসঙ্গ
বাংলা গানের বিবর্তন ,দ্বিতীয় পর্ব : অঘোরনাথ ও গওহরজান প্রসঙ্গ

বাংলা গানে আধুনিকতার একটি বড় দিক হচ্ছে যে রামনিধি গুপ্তের হাত ধরেই বাংলা গান এক ধরণের ধর্মনিরপেক্ষ রোমান্টিক থিমকে প্রধান উপজীব্য বিষয় করে তুলেছে। এটা সত্যি, যে চর্যাগিতর রাধা কৃষ্ণের প্রেম কাহিনীতে প্রতীকি হিসেবে রোমান্স এসছে , কিন্তু রামনিধি গুপ্তেই সম্পূর্ণ ভাবে নারী পুরুষের প্রেমানুভূতি নিয়ে লিখলেন , যা ছিল তাঁর আধ্যাত্মিক গান থেকে ভিন্নধর্মী। তাই অনেকেই এখন বলেন যে রবীন্দ্রসঙ্গীতে যে আধুনিকতার পরিচিতি আমরা পাই তার উৎপত্তি নিধু বাবুর গান থেকেই।

বাংলা গানের বিবর্তনের এই ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের এই সঙ্কলনে আমরা পরিবেশন করছি অঘোর চক্রবর্তী এবং শিল্পি গওহর জান এর গান, যথাক্রমে ১৯০৬ ও ১৯০৮ সালে রেকর্ড করা। কোলকাতার সেই বিখ্যাত শিল্পি গওর জানের আগেকার নাম ছিল মি অ্যাঞ্জলিনা । তাঁর বাবা William Robert Yeoward , মূলত আর্মেনীয় ইহুদি ছিলেন, প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন বেনারসের কাছাকাছি আজমগড়ে। তিনি ১৮৭০ সালের দিকে ভিক্টোরিয়া হেমিং নামের এক মহিলাকে বিয়ে করেন , যিনি ইহুদি ধর্মাবলম্বি হলেও ভারতীয় সঙ্গীত ও নৃত্য চর্চা করতেন এবং সেই সুত্রে খোরশেদ নামের ঝনেকি মুসলমান বন্ধুর সঙ্গে তাঁর সখ্যতা হওয়ায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মালকা জান নাম গ্রহণ করেন। ১৮৭৩ সাল অ্যাঞ্জেলিনার জন্ম । আর এই কিশোরী অ্যাঞ্জেলিনাই পর গওহর জান হয়ে যান।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বিহারের দ্বরভাঙ্গা এস্টেটে প্রথম সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। ১৯০২ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে গওহর জানের ৬০০ ‘র ও বেশি গান গামোফোন কোম্পানিতে রেকর্ড করা হয়। ১৯১১ সালে দিল্লি দরবারে আমন্ত্রিত হয়ে তিনি রাজা পঞ্চম জর্জের সামনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন এবং সম্রাট খুশি হয়ে ১০০টি স্বর্ণ মুদ্রা দিয়েছিলেন গওহর জানকে। ১৯৩০ সালে মৃত্যুর আগে পযর্ন্ত গওরজান , তাঁর সাঙ্গীতিক প্রতিভার অসাধারণ স্বাক্ষ্য রেখে গেছেন।

XS
SM
MD
LG