মিশরের রাজধানীতে সেনাবাহিনী, সরকার পন্থী ও সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারিদের মধ্যে অবস্থান নিয়েছে। বৃহষ্পতিবার সকালে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের পর গুলির শব্দ শোনা গেছে। এ বিষয়ে আমাদের সংবাদ বিভাগের তৈরি একটি রিপোর্ট পড়ছেন শামীম চৌধুরী।
কায়রোর তাহরির চত্বরের কাছে কয়েকটি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা হয়েছে। সরকার বিরোধী হাজার হাজার বিক্ষোভকারি সেখানে সমবেত হয়ে তৈরি করেছেন ব্যারিকেড।
একটি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা হয়েছে হাইওয়ে ওভারপাসের ওপর। আজ সকালে প্রেসিডেন্ট হোসনে মোবারকের সমর্থকেরা এখান থেকে নীচে সরকার বিরোধী সমর্থকদের ওপর পাথর ছুড়ছিল। বুধবার মি মোবারকের সমর্থকেরা যখন তাহরির চত্বরে জোর করে প্রবেশ এবং হোসনে মোবারকের প্রায় তিরিশ বছরের শাসন অবসানের জন্যে দাবী জানাচ্ছে যে বিক্ষোভকরিরা, তাদের ওপর হামলা করে, তখন সহিংস সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রধান মন্ত্রী আহমেদ শফিকের একটি টেলিফোন সাক্ষাতকার সম্প্রচারিত হয়েছে তাতে তিনি বলেছেন এই হামলা চালান ভুল হয়েছে।
তিনি বলছেন, তিনি বিরোধী পক্ষের ভাইদের একটা কথাই বলতে চান যে তারা সকলেই ভাই ভাই, মতামত নিয়ে সংঘর্ষ করে একে অপরকে তারা হত্যা করবেন না, যা হয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই ভুল করা হয়েছে।
দিনের শেষ দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে আহমেদ শফিক এ ব্যাপারে পুর্ন তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, তদন্ত করা হবে এবং তা করা হবে অত্যন্ত শুষ্ঠুভাবে। এছাড়াও এই ট্র্যাজেডি, এবং গতকালের বিপর্যয়কারি অনাবশ্যক সংঘর্ষ , এই তদন্তের এজেন্ডার শীর্ষে থাকবে। তিনি বলেন তিনি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন এই তদন্ত প্রকাশ করবেন যাতে জনগন দেখতে পারে যে বিক্ষোভকারিদের ওপর হামলা পরিকল্পিত ছিল নাকি এটা ঘটেছে স্বত:স্ফূর্তভাবে। এই ঘটনা কি কোন ব্যাক্তিদ্বারা আয়োজন করা হয়েছে? এই হামলার ঘটনাটা কি কোন বিশেষ সংস্থা পরিকল্পনা করেছে? যা ঘটেছে তার জন্যে প্রত্যেকে দায়ী। এই ঘটনা মিশরকে দুভাগে ভাগ করে দিয়েছে, খুব শিগগীরই এদেরকে জনসম্মুখে শাস্তি দেওয়া হবে।
সংবাদদাতারা বলেছেন এই সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্যে মিশরের সেনাবাহিনী প্রথমে হুঁশিয়ারী গুলি ছোড়ে। কিনতু সেনাবাহিনী মুলত মিশরের যাদুঘর সুরক্ষা দেওয়ার মধ্যেই নিজেদের দায়ীত্ব সীমাবদ্ধ রাখে। আগুনে বোমার আগুন নেভাবার জন্যে তারা জলকামান ব্যবহার করে।
সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারিরা তাদের এই নজীরবিহীন বিক্ষোভ দমনের জন্যে ভাড়া্টে গুন্ডা এবং সাদা পোষাকধারী পুলিশ দিয়ে শক্তি প্রয়োগ করছে বলে মি মোবারকের শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। এক সপতাহেরও বেশিদিন ধরে চলছে এই সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারিরা পুলিশের ব্যাজ দেখিয়ে বলেছে, তাদের ওপর হামলাকারিদের কাছ থেকে তারা এগুলো ছিনিয়ে নিয়েছে। জনতার ওপর হামলাকারিদের হাতে ছিল মুগুর, ছুরি এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র।