মিশরের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মরসি এখন নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন এবং তাঁর কথায় সকলের অংশগ্রহণে এই সরকার তিনি গঠন করবেন। মিশরের রাজনীতিতে এই যে চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ইসলামিক ব্রাদারহুড ‘এর অন্যতম নেতা ক্ষমতার শীর্ষে নিজের স্থান করে নিয়েছেন , এর অভ্যন্তরীন ও আঞ্চলিক তাৎপর্য নিয়ে , বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড সাইদ ইফতিখার আহমেদ ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন । ড আহমেদ বলেন যে নির্বাচনের ফলাফলে মরসি সে দেশের ইতিহাসে নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট আর সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় যে নিঃসন্দেহেই মিশরে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হলো।
তবে তিনি এটাও বলেন যে মোহাম্মদ মরসি নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামি ব্রাদারহুডের একজন প্রার্থি হিসেবে। সে জন্যেই এ রকম একটা উদ্বেগ রয়েছে যে , যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ ধরে তিনি ক্ষমতায় আসছেন , সেই গণতন্ত্রকে তিনি রক্ষা করবেন না কি কোন ভিন্ন পথে হাটবেন। তিনি গণতন্ত্র রক্ষার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অবশ্যই যে তিনি গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বস্থ থাকবেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সব প্রতিশ্রুতি তিনি পূরণ করবেন কী না , সেটা এখনই বলার সময় আসেনি। তবে এটা ঠিক যে উনি যদি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ লংঘন করেন , তা হলে আগামি দিনে তিনিও ব্যাপক আন্দোলনের সম্মুখীন হতে পারেন কারণ মিশরের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রের প্রত্যাশী হয়ে আছে।
মিশরের সামরিক বাহিনী যে সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সঙ্কোচন করেছে সেটি একদিকে যেমন অগণতান্ত্রিক অন্যদিকে ঠিক তেমনি বলা হচ্ছে ক্ষমতার এক ধরণের ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা, এ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবোবে ড আহমেদ বলেন যে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুডের দ্বন্দ্বটা বেশ পুরোনো এবং সেনাবাহিনী এ নিয়ে শঙ্কিত কারণ তারা ক্ষমতা হারাতে চাইছে না। এ ক্ষেত্রে মিশরের সেনাবাহিনী অনেকটা তুরস্কে সামরিক বাহিনীর মতো ভূমিকা পালন করতে চায়্ , হতে চায় সংবিধানের অভিভাবক। আর সে জন্যেই তারা সংবিধানে পরিবর্তন আনতে চাইছে। সুতরাং ভারসাম্যের সঙ্গে সঙ্গে সেনাহিনী ও মুসলিম ব্রাদাহুডের মধে্য দ্বন্দ্বটাও প্রকট হয়ে উঠবে।