অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

লিবিয়ার সামরিক বাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলা চালাচ্ছে


লিবিয়ার সামরিক বাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলা চালাচ্ছে
লিবিয়ার সামরিক বাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলা চালাচ্ছে

লিবিয়ায় , মুয়াম্মার গাদ্দাফির অনুগত বাহিনীর সৈন্যেরা আজ মঙ্গলবারেও বিদ্রোহি লড়াকুদের বিরূদ্ধে পাল্টা সমরাভিযান অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে । তেল বন্দর-শহর রাস লানুফের আশপাশে নতুন দফায় বিমান হামলা হচ্ছে । ওখানকার একটি আবাসিক এলাকার ওপরেও বিমান হামলা হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে ।

শহরটির ওপর এরকম বিমান থেকে বোমা হামলা আগের দিনেও হয়েছিলো । বিদ্রোহিদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে গাদ্দাফি সমর্থকদের তরফ থেকে আলোচনার জন্যে একটা প্রস্তাব এসেছিলো কিন্তু বিদ্রোহিদের নেতৃবৃন্দ তা প্রত্যাখ্যান করেছেন । লিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাদাল্লা আল তা’লির পক্ষ থেকেও শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো কিন্তু বিদ্রোহিরা সেটাও প্রত্যাখ্যান করেছেন এই ব’লে যে গাদ্দাফি না সরে যাওয়া পর্যন্ত কোনো কথাই নেই । রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের প্রচারিত আবেদনে জাদাল্লা আল তালহি ঐ আবেদন জানান ।২০০৮ সালে জাতিসংঘে লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতের ভূমিকাও পালন করেছিলেন ইনি ।তিনি বিদ্রোহিদের প্রতি , শান্তি আলোচনাকে একটা সুযোগ দেবার আহ্বান জানান ।

ইতিমধ্যে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ লিবিয়ার বর্ধমান সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন । কূটনীতিকরা বলছেন, লিবিয়ার ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ প্রশ্নে ইউরোপিয় ইউনিয়ন একমত হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় মূয়াম্মার গাদ্দাফি সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আর্থ প্রতিষ্ঠানগুলোসহ লিবিয়ার বিনিয়োগ কতৃপক্ষকে চিহ্নিত করা হবে । কূটনীতিককেরা বলছেন শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন এসব বিধিনিষেধ অনুমোদন ক’রবে ব’লে আশা করা হ’চ্ছে ।

লিবিয়ার বিরোধী দলীয় জাতীয় পরিষদ দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় সংসদের সদস্যদেরকে অবহিত করছেন । শুক্রবার ইউরোপীয় সংসদ বিশেষ শীর্ষ বৈঠকে বসবে বলে স্থির হয়েছে । লিবিয়া পরিস্থিতি আলোচনার জন্যে আরব লীগ শুক্রবার কায়রোয় বৈঠকে বসছে বলে ঘোষনা করা হয়েছে । ইতিমধ্যে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ সোমবার আবু ধাবীতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লিবিয়ার সরকার সমর্থক বাহিনীর অভিযানকে বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞ বলে অভিহিত করেছে । এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন বিশ্ব শক্তিবর্গ বিবিধ প্রকরনের বিকল্প পন্থাদির কথা বিবেচেনা ক’রছেন যার মধ্যে সামরিক অভিযানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ।

ওদিকে জেনিভায় জাতিসংঘের জরুরী ত্রাণ সমন্বয়ক ভ্যালারী এমস্ বলেছেন – এক সময় লিবিয়ায় অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ছিলো প্রায় ২৫ লক্ষ ; এর মধ্যে থেকে ২ লক্ষ লোক এখন প্রাণভয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, পালিয়ে গিয়েছেন । লিবিয়া ইতিমধ্যে জাতিসংঘ মিশনকে রাজধানী ত্রিপোলি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে কিন্তু ভ্যালারী এমস্ ব’লছেন তাঁদেরকে অবাধ প্রবেশাধিকার দিতে হবে সর্বত্র যাতে তাঁরা অভিবাসি শ্রমিকদের সাহায্যে তাঁরা এগিয়ে যেতে পারেন ।

ইতিমধ্যে লিবিয়ায় বিমান উড়ান নিষিদ্ধ আকাশ সীমা নির্ধারনের লক্ষে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ জিসিসি যে আহ্বান জানায় তাতে সাড়া দিয়ে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের তরফে প্রস্তাবটি নিয়ে বিচার বিবেচনা চলছে ।

লিবিয়ার চলমান আন্দোলন এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্রিটিশ লেখক ও সাংবাদিক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন এর সঙ্গে কথা বলেছি আমরা ।

। লিবিয়ার এই আন্দো্লনকে ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন এর আগে তিউিনিশিয়া কিংবা মিশরের উত্থানের চেয়ে ভিন্ন ভাবে দেখছেন । তিনি বলেন যে সেখানকার আন্দোলনের প্রকৃতি সম্পুর্ণ আলাদা হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো ব্যাপারটি আলাদা ভাবে দেখছে ।

তিনি বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটোতে তার মিত্র রাষ্ট্রগুলি ক্রমশই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বোধ করছেন যে গাদ্দাফি ক্ষমতা ছাড়বেন না , সংস্কার ও আনবেন না এবং সে কারণেই তাঁরা হয়ত লিবিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ , এটা প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপই হোক কিংবা কোন ধরণের বিমান উড়ান নিষিদ্ধ আকাশ সীমা যাতে করে গাদ্দাফি তা নিজের জনগণের ওপর কোন রকম বিমান হামলা চালাতে না পারে। কিন্তু এই ধরণের আকাশ সীমা স্থাপন করলে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে ক্রিস বলেন যে সেখানে সহিংসতা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব ব্যবস্থা নেবেই। আর যুক্তরাস্ট্রের সেনেটর কেরি তো বলেছেনই যে যুক্তরাষ্ট্রের এ জন্যে সেই এলাকায় টাস্ক ফোর্স পাঠানো উচিৎ । তা ছাড়া নেটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যে রকম কথা বলা হচ্ছে তাতে মনে হয় যে এ ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ প্রায় আসন্ন হয়ে পড়েছে।

XS
SM
MD
LG