হ্যালো ওয়াশিংটনের আজকের আলোচনায় বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়েছে শারিয়া আইন এবং ফতোয়ার প্রভাবের ওপর। দোররার আঘাতে মৃত কিশোরী হেনা বাংলাদেশে ফতোয়ার শিকার সব মহিলা ও কিশোরীর প্রতীক। ধর্ষিতা নারী, এমনকি শিশুকেও বিয়ে দেওয়া হচ্ছে ধর্ষনকারির সংগে এমন খবরও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে প্রায়ই। ফতোয়ার ব্যাপারে দেশের আইনে কি বলা হয়েছে, ফতোয়া কারা দিচ্ছে, প্রশাসন কি ব্যবস্থা নিচ্ছে, কেন মেয়েরা এবং সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারের মেয়েরাই এর ফতোয়ার শিকার, অপরাধিদের শাস্তি, আইনের প্রয়োগ এসব প্রশ্নই শ্রোতারা করেছেন এবং উত্তর দিয়েছেন অতিথি আলোচকেরা।
এই আলোচনার প্যানেলে ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে টেলিফোনে যোগ দিয়েছেন মওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক তিনি। বাংলা এবং আরবি ভাষায় তার প্রকাশনার সংখ্যা একশোর মতো। ঢাকার একটি মাদ্রাসায় তিনি বর্তমানে শিক্ষকতা করছেন।
ক্যানাডা থেকে টেলিফোনে যোগ দিয়েছেন হাসান মাহমুদ। বর্তমানে তিনি শারিয়া ল মুসলিম ক্যানাডিয়ান কংগ্রেসের ডিরেক্টর, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কংগ্রেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক এ্যাসোসিয়েট, বর্তমানে- দ্বীন রিসার্চ সেন্টার হল্যান্ডে- রিসার্চ এ্যাসোসিয়েট। শারিয়া আইন নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘ দিন ধরে। এ নিয়ে তার অনেকগুলো প্রকাশনা আছে সেই সংগে ফতোয়া নিয়ে অনেকগুলো তথ্যচিত্রও নির্মান করেছেন তিনি।
এ আলোচনায় ভিওএ বাংলা ফেইস বুক ফ্যান পেইজ খোলা ছিল এবং এর মাধ্যমে বহু শ্রোতা আলোচনায় তাত্ক্ষনিক মন্তব্য পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশে শারিয়া আইন ও ফতোয়া নিয়ে এক জন শ্রোতা প্রশ্ন করেছেন যে আইন অমান্য করে যারা এই ফতোয়া দিচ্ছেন তারা জেনে শুনেই দিচ্ছেন, এবং দোররা কিংবা পাথর নিক্ষেপের ঘটনার সময় কেন কেউ প্রতিবাদ করেন না?
প্রশ্ন করেছেন শ্রোতারা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে। ১৯৭১ সালে পাকিসতানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আল বদর বাহিনীর সদস্যদের বিচার না হওয়ায় সমাজে এই ধরনের হিংস্রতা বেড়েছে বলে প্রশ্নের জবাবে মওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ বলেন যুদ্ধাপরাধীদের অবশ্যই বিচার হতে হবে। বিশেষ করে সম্প্রতি ফতোয়ায় দোররা মেরে শাস্তি দেওয়ার সময় নিহত হেনা আখতারের ঘটনা উল্লেখ করে একজন শ্রোতা এর তীব্র নিন্দা জানান এবং এই ফতোয়ার সংগে জড়িত ব্যাক্তিদের জনসম্মুখে দোররা মেরে শাস্তি দেওয়ার দাবী তোলেন।
শারিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষনা করছেন, লিখছেন এবং আন্দোলন করছেন হাসান মাহমুদ কোরআন থেকে কয়েকটি সুরার উল্লেখ করে – ফতোয়ার অপপ্রয়োগের ব্যাখ্যা করেন। বস্তুত, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদও তার ব্যাখ্যায় স্পষ্ট করে দেন যারা এই ফতোয়া দিচ্ছেন তাদের তা দেওয়ার যোগ্যতা নেই। এবং মওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ, হাসান মাহমুদকে প্রস্তাব দেন যে এই ধরনের অপব্যাখ্যা দেওয়া ও ফতোয়া বন্ধ করার জন্যে তারা দুজনে আলোচনা করতে পারেন। যা দেশব্যাপি গনসচেতনতা তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে।
বিস্তারিত আলোচনাটি শুনুন এবং এ বিষয়ে ইমেইলে অথবা ফ্যানপেইজে আপনার মতামত জানান।