বাংলা নববর্ষ পালনকে সর্বজনীন বাঙালির একটি ধর্ম নিরপেক্ষ ও আত্মপরিচিতি মুলক উৎসব হিসেবে বর্ণনা করেছেন, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড:গোলাম মুরশিদ।
ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগের সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও বিবর্তনের কথা বলেন।
তিনি বলেন যে একেবারে প্রায়োগিক কারণে হিজরি বছরকে সম্রাট আকবরের সময়ে বাংলা সৌর বছরের হিসেবের মধ্যে এনে বিভিন্ন বাংলা মাসের নাম দেওয়া হয়। এর কারণে ফসল উৎপাদনের পর খাজনা দেওয়া সুবিধাজনক হয় সবার জন্য। এই সাক্ষাৎকারে ড: মুরশিদ বলেন যে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বাঙালি সংস্কৃতির যে বহিপ্রকাশ ঘটে তা সকল বাঙালির সমান সম্পদ। তিনি একে আত্মপরিচিতির একটি বড় উপায় বলে মনে করেন।
তিনি বলেন যে পাকিস্তান আমলে বাংলা নববর্ষ পালনকে যে হিন্দুয়ানি বলে আখ্যায়িত করা হতো সেটা ভুল। এর উৎপত্তি আর বিকাশে হিন্দু মুসলিম উভয়েরই ভুমিকা আছে। আর সব চেয়ে বড় কথা হলো বর্তমান বাংলাদেশের পরিচিতির সঙ্গে পয়লা বৈশাখ পালনের বিষয়টি যে ভাবে সম্পৃক্ত এবং এই উৎব এখন যে নতুন মাত্রা পেয়েছে, তেমন ভাবে পশ্চিম বঙ্গেও নববর্ষ উদযাপিত হয় না।
এক প্রশ্নের জবাবে ড: মুরশিদ বলেন যে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা-ইলিশ খাওয়াকে যারা একদিনের ফ্যাশান বলে সমালোচনা করেন, তাদের সঙ্গে তিনি একমত নন। তিনি বলেন উৎসব তো একদিনই হয় এবং এই উৎসবের সঙ্গে যারা একাত্ম হন, তারা বাঙালিয়ানাকে টিকিয়ে রাখার জন্যেই তা করেন।