অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

গো্পন নথিপত্র ফাঁসের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার উদ্‌বেগ প্রকাশ


গো্পন নথিপত্র ফাঁসের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার উদ্‌বেগ প্রকাশ
গো্পন নথিপত্র ফাঁসের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার উদ্‌বেগ প্রকাশ

Wikileaks তাদের ওয়েবসাইটে আফগানিস্তানে ছয় বছরের ঘটনাপঞ্জির বিবরণ সম্বলিত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও মেরিন কোর ৭৫ হাজারেরও বেশি নথিপত্র প্রকাশ করেছে। তারা দাবি করছে যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্যে তারা এ ধরণের নথিপত্র প্রকাশ করে থাকে। এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা বলছেন যে এই গো্পন সব নথিপত্র প্রকাশে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা বিপদগ্রস্ত হয়েছে কী না, সেটি খুটিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনিস আহমেদ :

বস্তুত যেমনটি আমরা জানি যে ২০০৭ সাল থেকে উইকিলিকস ইন্টারনেটে হাজার হাজার নথিপত্র প্রকাশ করেছে ওদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে সংগঠনটি গোড়াতে অনেকের অসুবিধে দূর করার অভিপ্রায়ে সক্রিয়বাদীদের সঙ্গে এ ধরণের সংলাপ শুরু হয় ওয়েবসাইটে এবং তার পর তারা তথ্য ফাঁস করার কাজে লিপ্ত হয়।

রোকেয়া হায়দার :

আসলে এই ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা Julian Assange নিজেকে তথ্য সক্রিয়বাদী বলে অভিহিত করছেন যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তথ্যগুলোকে জনসাধারণের নাগালের ভেতরে নিয়ে আসা। তিনি বলেন যে তাঁর খুব অল্প সংখ্যক পূর্ণ সময়ের জন্যে কর্মী রয়েছেন, আটশ’র মতো খন্ডকালীন কর্মীও আছেন তবে সমর্থক আছেন হাজার হাজার।

আনিস:

তবে আরেকটা ব্যাপার কি জানেন? তিনি বলছেন যে তাদের এই ওয়েব সাইটের যে সাফল্য এবং এর জন্যে এতো বিপুল পরিমাণ তথ্য তারা পাচ্ছেন যে সব কিছুর প্রতি তারা সুবিচার করতে পারবেন কী না সে নিয়ে তার মনে একটা সংশয় আছে। তবে তারা যে এ ব্যাপরে প্রচুর আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছেন সেটি Julian Assange উল্লেখ করেন।

রোকেয়া :

তিনি বলছেন, এই আর্থিক সহযোগিতা সম্পর্কে তিনি যেমনটি বলছিলেন যে তারা দশ লক্ষ ডলার জনসাধারণের কাছ থেকে তুলেছেন আর সে জন্যেই তিনি মনে করেন যে তাদের দারুণ এক ধরণের স্বাধীনতা আছে, যা কিনা অন্যদের নেই এবং তাদের জবাবদিহিতা সরাসরি জনসাধারণের কাছে কোন সংগঠন বা বিজ্ঞাপনদাতার কাছে নয়।

আনিস :

তবে এই স্বাধীনতা সম্পর্কে নিরাপত্তার কারণে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এ ধরণের সব গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য প্রকাশে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও পাকিস্তানে উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে। জয়েন্ট চীফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল মাইক মালেন আফগানিস্তান থেকে ইরানে রওনা দেবার আগে বিমানেই বলেছেন যে তিনি অবাক হয়েছেন যে এ ধরণের একেবারে অজানা গোপন তথ্যগুলো প্রকাশ করা হয়েছে এবং তা আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের তৎপরতাকে খর্ব করতে পারে।

রোকেয়া :

সেটা ঠিক। তিনি বলছেন যে অনেক সময়ে লোকজন বুঝতে পারে না যে কোন তথ্যটা প্রকাশ করা উচিৎ এবং কোনটা উচিৎ নয় আর সে রকম ক্ষেত্রে মানুষের পেশাগত জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়। তিনি বলেছেন যে ভবিষ্যতে এ রকম কোন তথ্য যাতে ফাঁস না হয় সে ব্যাপারে সামরিক বাহিনী প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে।

আনিস :

তবে এ সব তথ্য ফাঁস হয়ে যাবার আগেই মিঃ মালেন তাদের কোন কোন অভিযোগ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে এই অভিযোগ যে পাকিস্তাোনের গোয়েন্দা সংস্থা, আই এস আই, হাক্কানী নেটওয়ার্ক সহ কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠিকে সমর্থন করছে।

রোকেয়া :

তিনি বলছিলেন যে ঐ হাক্কানী নেটওয়ার্কের দিকে আমাদের নজর আছে কারণ তারা আফগানিস্তানে আমাদের প্রচেষ্টায় অনেক বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। সুতরাং পাকিস্তানে যেই হোক না কেন, সেখানকার সামরিক বাহিনী কিংবা আই এস আই যে ভাবেই ঐ গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হোক না কেন, সেটা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আনিস :

উইকিলিকস এর এই তথ্য ফাঁসকে অবশ্যি একজন সাবেক গোয়েন্দা বিশ্লেষক বব আয়ার্স, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তেমন কোন হুমকি বলে মনে করেন না, তিনি বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঠিক না তবে সেখানে যোদ্ধাদের জন্যে সেটা হুমকি হতে পারে। তাছাড়া আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক সম্পর্ককে বিনষ্ট করতে পারে।

রোকেয়া :

হ্যাঁ কিন্তু আসল সমস্যাটা সেখানেই, কারণ আফগানিস্তানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলের একটা প্রধান দিক হলো পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা যাতে করে পাকিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে আল ক্বায়দা ও সংশ্লিষ্ট যে সব উগ্রবাদী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে এবং যারা আফগানিস্তানে অনুপ্রবেশ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।

আনিস :

আর এই প্রচেষ্টায় অ্যাডমিরাল মালেন মূখ্য ভুমিকা পালন করছেন এবং এই তো মাত্র গত সপ্তায় তিনি পাকিস্তান সফরে যান এবং পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সেনাপ্রধান এবং আই এস আই এ র সাবেক প্রধান জেনারেল আশফাক কিয়ানির সঙ্গে কথা বলেছেন। আই এস আই এর ভুমিকা নিয়ে যে সময়টা কথা বলা হয়েছে, সে সময়ে জেনারেল কায়ানি এর পরিচালক ছিলেন।

রোকেয়া :

মালেন বলছেন যে এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। জেনারেল কায়ানি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বুঝতে পারছেন। অ্যাডমিরাল মালেন আবার ও বলেন যে আই এস আই কে অবশ্যই তাদের দিক পরিবর্তন করতে হবে তবে সেটা ঠিক কতদূর হয়েছে সেটা তিনি বুঝতে পারেননি।

আনিস :

সে জন্যেই পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের একটা চ্যালেঞ্জ এর দিক রয়েছে। তবে তিনি বলেন যে উইকিপিডিয়াতে প্রকাশিত গোয়েন্দা রিপোর্টকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিসেবে দেখতে হবে। তিনি বলছেন যে তার লোকজন এই প্রায় ৯০ হাজার নথিপত্র দেখছেন এ গুলোতে নতুন কিছু আছে কী না।

XS
SM
MD
LG