অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

এবারও শূন্য আসনে প্রয়াত এমপি পরিবারের বাইরে মনোনায়ন দিল আওয়ামী লীগ


ফাইল ফটো-আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৯ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণা শুরু করেছেন। ১৫ ডিসেম্বর ২০০৮।
ফাইল ফটো-আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৯ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণা শুরু করেছেন। ১৫ ডিসেম্বর ২০০৮।

আজ কুমিল্লা-৭ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি নাক, কান, গলার একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এই আসনের প্রয়াত এমপি অধ্যাপক আলী আশরাফের ছেলে মুনতাকিম আশরাফ টিটুও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড শূন্য আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে এবার প্রচলিত অবস্থানের পরিবর্তন করেছে। তৃণমূল আওয়ামী লীগ বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নিচ্ছে। তারা মনে করছে, দলকে গতিশীল করতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান বদল দলের জন্য ইতিবাচক।

গত এক বছরে শূন্য আসনে দেওয়া বেশিরভাগ মনোনয়নই প্রয়াত এমপিদের পরিবারের বাইরে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের এক ধরনের রেওয়াজ থেকে বেরিয়ে আসছে দলটি। সর্বশেষ সিলেট ৩ আসনের এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ফারজানা চৌধুরী মনোনয়ন চান দলের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমপি পরিবারের মনোনয়ন মেলেনি। মনোনয়ন পেয়েছেন প্রবাস ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানের। তিনি ভোটে জয়ীও হয়েছেন। ঢাকা-১৪ আসনের এমপি আসলামুল হকের মৃত্যুর কারণে শূন্য আসনে মনোনয়ন চান তার স্ত্রী মাকসুদা হক। কিন্তুু মনোনয়ন পাননি তিনি। আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে দলের থানা পর্যায়ের সভাপতি আগা খান মিন্টুকে। একই অবস্থা হয় কুমিল্লা-৫ আসনের পাঁচবারের এমপি আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর শূন্য আসনে খসরুর ভাই আবদুল মতিন ফেরদৌস ও স্ত্রী মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তুু মনোনয়ন মেলেনি এই পরিবারের কারও। ঢাকা-১৮ ও ঢাকা-৫ শূন্য আসনে প্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও হাবিবুর রহমান মোল্লা পরিবারের কেউ মনোনয়ন পাননি। তৃণমূলের নেতারা মনোনয়ন পান এই দুই আসনে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এ রাজনৈতিক দলটি রীতি অনুযায়ী সব সময় দলীয় নেতাদের পরিবারের সদস্যদের রাজনীতিতে অগ্রাধিকার দিত। নেতাদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যারা মনোনয়ন এবং দলীয় পদ পেতেন। এমনকি সংসদে সংরক্ষিত আসনেও তাদের জন্য আলাদা কোটা ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে সেই ধারাবাহিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে দলটি। করোনাকালে শুধু মাত্র সিরাজগঞ্জের একটি আসনে মোহাম্মদ নাসিম পুত্র তানভিরুল হক জয় এবং বগুড়ার আরেকটি আসনে দলের প্রয়াত নেতা আবদুল মান্নানের স্ত্রী মনোনয়ন পেয়েছেন। এর বাইরে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। অন্য আসনগুলোতে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা অথবা দীর্ঘদিন নির্বাচনী এলাকায় কাজ করা নেতাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। উড়ে এসে জুড়ে বসাদের বিষয়েও দলটি এখন সতর্ক। শুধু দলীয় মনোনয়ন নয়, নেতা নির্বাচনেও রয়েছে এখন বাড়তি সতর্কতা।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম, যিনি এ দলের টানা ছয়বারের এমপি। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যবাহী একটি রাজনৈতিক দল। এ দলটি কর্মীনির্ভর। কর্মীদের পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিয়েই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও দলীয় মনোনয়ন বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এ বিষয়েও তাই হয়েছে। পরিবারের সদস্য নয়, মাঠের কর্মীদের সঙ্গে থাকা লোকজনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ উদ্যোগ দলকে আগামীদিনে আরও গতিশীল করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

XS
SM
MD
LG