অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

অযোধ্যা আগে ছিল বৌদ্ধদের পবিত্র শহর সাকেত দাবি বৌদ্ধ সংগঠনের


অযোধ্যা রাম জন্মভূমিকে নিয়ে বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। হঠাৎ করে বৌদ্ধদের একটি সংগঠন দাবি করে বসেছে, রাম জন্মভূমি আসলে বৌদ্ধ তীর্থস্থান এবং অযোধ্যা আগে ছিল বৌদ্ধদের পবিত্র শহর সাকেত। ওঁদের দাবি, সেখানে বহুদিন আগে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের মঠ যাকে বিহার বলা হয়, তাই ছিল। বিদেশ থেকে আসা মুসলমানদের আগ্রাসী অভিযানের ফলে সেই বিহার ধ্বংস হয়ে যায়, তবে তার বেশ কিছু চিহ্ন ওইখানে আছে বলে বৌদ্ধরা দাবি জানিয়েছেন। বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলা থেকে কয়েকজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী গতকাল উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় গিয়ে হাজির হন এবং তাঁদের দাবির প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অযোধ্যার জেলাশাসকের অফিসের সামনে তাঁরা অনশনে বসে পড়েন। তাঁদের দাবি হলো, অযোধ্যার রাম জন্মভূমিতে রামের মন্দির বানানোর জন্য জমি তৈরি করতে গিয়ে সেখানে যে সব জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে, আসলে তা বৌদ্ধ সংস্কৃতির স্মারক। সেগুলো যাতে সরিয়ে ফেলা না হয় তার জন্য সর্বসমক্ষে সেগুলো দেখানোর ব্যবস্থা করা হোক, অবিলম্বে রাম মন্দির তৈরির কাজ স্থগিত রাখা হোক, আর জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর তত্ত্বাবধানে রাম জন্মভূমি স্থলে খননকার্য চালানো হোক। বৌদ্ধ সংগঠনটির বক্তব্য, তাঁরা প্রশাসনকে একমাস সময় দিচ্ছেন। এক মাসের মধ্যে এই দাবি অনুযায়ী কাজ না হলে এবং ইউনেস্কোর তত্ত্বাবধানে খননকার্য শুরু না হলে তাাঁরা আবার জোরদার আন্দোলনে নামবেন। ফৈজাবাদ থানার পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে শুনিয়ে অনশন থেকে নিবৃত্ত করেছে এবং তাঁদের দাবিপত্র দিল্লিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আসলে গত মে মাসে যখন রাম মন্দির তৈরির জন্য ওখানে জমি তৈরি করা হয়েছিল তখন মাটির তলা থেকে একটি শিবলিঙ্গ, সাতটি কালো পাথরের স্তম্ভ, ছটি লাল পাথরের স্তম্ভ এবং কিছু ভাঙাচোরা দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। বৌদ্ধদের দাবি, এই সবগুলো আসলে বৌদ্ধ সংস্কৃতির ধারক। গতবছর নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যখন রাম জন্মভূমির পুরো চত্বরটাই রাম মন্দির তৈরির জন্য ছেড়ে দেওয়া হয় এবং ওখানকার সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের জন্য আলাদা জমি দেখে মসজিদ বানানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, তখন ধারণা করা হয়েছিল বিতর্ক হয়তো শেষ হলো, যদিও সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায়ে সকলে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। কিন্তু আদতে দেখা যাচ্ছে ভেতরে ভেতরে নানান রকম ভাবে ঝামেলা হয়েই চলেছে। এই সপ্তাহের গোড়াতেই নেপালের প্রধানমন্ত্রী অলি দাবি করেছিলেন যে রামচন্দ্র আসলে নেপালি, নেপালেই তাঁর জন্ম এবং অযোধ্যা আসলে নেপালের একটি জায়গা, কিন্তু ভারত নেপালি সংস্কৃতি ছিনতাই করে নিয়েছে। গতকাল এবং আজ নেপালের সরকারি তরফে অবশ্য এ ব্যাপারে ত্রুটি সংশোধনের চেষ্টা চলছে। বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী অলি ভারতীয় হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করতে চাননি। তিনি শুধু একটা বিতর্কের অবতারণা করে বলেছেন যে এটা ইতিহাসের আলোতে দেখা যেতে পারে‌। যাই হোক, আসলে একের পর এক বিতর্ক ও ঝামেলা অযোধ্যাকে ঘিরে হয়েই চলেছে।

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:08 0:00
সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG