অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভূমি পুজার মধ্য দিয়ে রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা করলেন নরেন্দ্র মোদী


ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ অযোধ্যায় মহাসমারোহের সঙ্গে ভূমি পুজা করে রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা করলেন। ৪০ মিনিটের উপর ধরে পুজো সারার পর যজ্ঞ স্থল প্রদক্ষিণ করে তিনি গেলেন মূলমঞ্চে বক্তৃতা দিতে। প্রথমেই তিনি বলেন, আজ সরযু নদী তীরে এক স্বর্ণযুগের সূচনা হলো। তিনি বললেন রাম মন্দির বহুজনের স্বপ্ন, বহুজন এর জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। তাঁদের বলিদান বিফলে যাবে না। রাম মন্দির সারা ভারতের সব ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে উঠবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাম যেমন তাঁর রাজত্বে কোনও দুঃখী, কোনও দরিদ্র থাকতে দেবেন না পণ করেছিলেন, আমরা ভারতীয়রা তাঁর পথ ধরে চলব। আমাদের কাজ হবে এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে সৌভ্রাত্রের বীজ বপন করা। সবাইকে নিয়ে সবার সঙ্গে একত্রে চলা। এই মন্দির আমাদের মনকে বিকশিত করবে এবং সার্বিকভাবে ভারতবাসীর মানসিক বিকাশ হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক বিকাশও অবশ্যম্ভাবী হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা ভারত আর সারা পৃথিবীতে যত ভারতীয় আছেন তাঁরা এই দিনটির জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। আজ তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে‌। মহাত্মা গান্ধীও রামরাজ্যের কথা বলেছিলেন। আমরা তাঁর স্বপ্ন পূরণ করব। নরেন্দ্র মোদী বিদেশের বহু উদাহরণ টানেন। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড এমনকি ইরান ও চীনে রামের পুজো করা হয়, বললেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, এই রাম মন্দিরকে কেন্দ্র করে সারা ভারত এক চিন্তা এক মনোভাব নিয়ে গড়ে উঠবে। করোনা পরিস্থিতির জন্য সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো যায়নি বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করছিলেন। প্রধানমন্ত্রী যখন এই কথা বলছেন, তাঁর আশপাশে ও যজ্ঞস্থলে যাঁরা ছিলেন তাঁদের মধ্যে তিনি এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বাদে আর কারও মুখেই ঠিকঠাক ভাবে মাস্ক পরা ছিল না। কারও কারও মুখে মাস্ক ছিলই না। ঠিক একই ছবি লক্ষ্য করা গিয়েছে অভ্যাগতদের মধ্যেও।

আজকে রামের নাম নিয়ে যে বিপুল উম্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে তাতে দেশবাসী কতটা যোগ দিয়েছেন, মানসিকভাবে তাতে কতটা তারা নিজেদের যুক্ত করতে পেরেছেন, তার একটা ছোট্ট উদাহরণ আমরা পেলাম কলকাতার বাসিন্দা একজন গৃহবধূ অনিন্দিতা সেনগুপ্তর কথায়। বাড়িতে বৃদ্ধ ও অসুস্থ বাবার দেখাশুনা করতে হয় অনিন্দিতাকে, তাঁর মেয়ে লকডাউনের জন্য কর্মস্থলে যেতে পারছেন না, বাড়িতে আছেন। এঁদের সকলের খাওয়া-দাওয়া দেখাশোনার দায়িত্ব ওঁর একার ওপরে। ফলে হাতে সময় প্রায় নেই বললেই চলে। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম রাম মন্দিরের সম্পর্কে তাঁর ধারণা বা বক্তব্য কী।

অনিন্দিতা সেনগুপ্ত বলেন, বাংলার ঘরে ঘরে সাধারণ পুরুষ ও মহিলাদের অধিকাংশ এই একই চিন্তাধারায় বিশ্বাসী। কেউ কেউ অবশ্য রাম মন্দির নিয়ে খুবই উত্তেজিত, কিন্তু এই করোনার আবহে রাম মন্দির কতটা যুক্তিযুক্ত, কতটা তার প্রয়োজনীয়তা, তা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু উঠছেই। উত্তর ও মধ্য ভারতে যদিও অবস্থাটা অন্যরকম। হিন্দি বলয়ে রাম মন্দির নিয়ে যথেষ্ট উত্তেজনা রয়েছে। কংগ্রেস প্রথমে এর বিরোধিতা করলেও পরে জনগণের মনোভাব বুঝতে পেরে কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী যেমন বলেছেন, রাম সকলের, কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের নয়। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের কমল নাথ রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ন'টি রূপোর ইট পাঠাবেন ঠিক করেছেন। এইভাবে কোনও না কোনও ভাবে রাজনীতিবিদরা রাম, রাম মন্দির, অযোধ্যা, এসবের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত রাখতে চাইছেন।

সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG