অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

খোরশেদ এখনো ৮টি কবর পাহারা দেন


কেউ আসেনা। কেউ খবর নেয় না। জানার চেষ্টাও করে না তার আত্মীয়ের লাশ আমরা কি করেছি। দাফন করলে কোথায় করেছি। দিনের পর দিন মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে। এখনও অন্তত এক জনও ফোন করলো না। করোনা এতটাই নির্মম, নিষ্ঠুর। কিভাবে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে এটা না দেখলে বুঝা যায় না। এমন এক অভিজ্ঞতার কথাই জানালেন মাকছুদুল আলম খোরশেদ । নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কাউন্সিলর। নেট দুনিয়া এখন যাকে নিয়ে মশগুল। উৎসাহে টুইটুম্বুর। এক সাহসী করোনা যোদ্ধা। ডর, ভয় তাকে ঘরে আটকিয়ে রাখতে পারেনি। ৮৪ টি লাশ দাফন করে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। ভয়েস অফ আমেরিকার এই সংবাদদাতাকে বলেন, কিছু পেতে নয় কিম্বা কোন কিছুর বিনিময়ে নয় মানবিকতার বার্তা পৌছাতেই এই কাজটি করেছেন। কোন প্রশ্ন না রেখে হিন্দুদের সৎকারে এগিয়ে গেছেন। পেয়েছেন অগণিত মানুষের ভালবাসা। করোনা তাকেও ছোবল দিয়েছিল। কিন্তু অসীম সাহস নিয়ে মোকাবিলা করেছেন। একবারের জন্যও মনোবল হারাননি। বললেন, ভয় পেলে চলেনা। দেখুন কি আর বলবো, ৮টি কবর আমরা পাহারা দিয়ে যাচ্ছি দিনের পর দিন। কেউ এসে খবরও নিচ্ছেনা। বসে আছি এটা ভেবে অবস্থার পরিবর্তন হলে হয়তো কেউ এসে জানতে চাইবে। তার আত্মীয়ের লাশটা কোথায় দাফন করা হয়েছে।

খোরশেদ বলেন, করোনা তাকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে। যখন তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হন ফুসফুস তখন বিকল হয়ে যাচ্ছিল। তখন একটা অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন। কেউ দেয়নি। হাসপাতালে নেয়ার আগ পর্যন্ত কোন অক্সিজেন সুবিধা ছিলো না। এখন দশটা অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহ করেছেন। যারা বাড়িতে থেকে আইসোলেশনে আছেন তাদেরকে এই সুবিধা দেয়া হচ্ছে। প্লাজমা সংগ্রহ করে মানুষকে দিচ্ছেন বিনামূল্যে। তিনি বলেন, শুরুটা করেছিলেন অনেকটা আবেগ তাড়িত হয়ে। পরিস্থিতি এরকম হবে ভাবেননি। তার মতে সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। কুরবানির ঈদ উপলক্ষে আরেকটা ধাক্কা আসতে পারে। দশজন মানুষ গরু কিনলে এটা দেখতে যায় হাজার খানেক মানুষ। এতে করে বিপুল সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়ে যেতে পারেন। যারা নীতিনির্ধারণ করেন তারা এই দিকটা বিবেচনায় নেবেন এটাই আশা করা যায়।

please wait

No media source currently available

0:00 0:03:24 0:00
সরাসরি লিংক


XS
SM
MD
LG