স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের আশংকা ঈদ ও বন্যাকে ঘিরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে পারে। তার আশংকার অন্যতম কারণ হচ্ছে পশুর হাট। মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। যদিও বারবার তাদেরকে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। বন্যার কারণেও লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারছে না। গাদাগাদি করে একসঙ্গে থাকছে। এতে করে সংক্রমণ বেড়ে যাবার আশংকাই বেশি। রোগ তত্ত্ববিদ ডা. মোশতাক হোসেন মনে করেন ঈদের সময়টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এ সময় অনেক মানুষ বেপরোয়াভাবে চলাচল করবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনে করেন বাংলাদেশে সার্বিক বিবেচনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। মৃত্যুর হারও কমছে। যথাযথ উদ্যোগ নেয়ায় কোভিড হাসপাতালে এখন ৬০ ভাগ বেড খালি পড়ে আছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আক্রান্ত কম ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছেন। তারা বলছেন, টেস্টের ফি নির্ধারণ করার পর মানুষজন হাসপাতালে যাচ্ছে কম। বন্যার কারণেও মানুষ পানিবন্দী। বের হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার মত অবস্থা নেই। এটাই সংক্রমণ কম হওয়ার অন্যতম কারণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, আমরাতো আন্দাজে কথা বলিনা। বিজ্ঞান এবং ট্রেন্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বাংলাদেশে সংক্রমণ কমেনি বরং বাড়তির দিকে।ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আমাদেরকে লকডাউনের পথে যেতে হবে। অন্তত তিন সপ্তাহের জন্য লকডাউন না হলে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যেতে পারে পরিস্থিতি। হাসপাতালে বেড খালি মানে এটা নয় যে রোগী কমে গেছে। আসলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থাহীনতা। বাড়িতে কষ্ট করছে কিন্তু হাসপাতালে যাচ্ছে না।
রাজধানী ঢাকা এখনো করোনার হটস্পট। প্রথম দুই মাসে ৫৪ শতাংশ রোগীই ছিল ঢাকার। বাকি ৪৬ শতাংশ ছিল ঢাকার বাইরের জেলার। গত দুই মাসে রাজধানী ঢাকায় আরও ১৫ শতাংশ বেড়ে ৬৯ শতাংশে পৌঁছেছে। ঢাকায় এ পর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজার ৪৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৬৫৪ জন।
ওদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৬৯৫ জন। মারা গেছেন ৪৮ জন। সবমিলিয়ে দেশে দুই লাখ ৩৪ হাজার ৮৮৯ জনের শরীরে করোনার হদিস মিলেছে। মারা গেছেন তিন হাজার ৮৩ জন। সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৩২ হাজার ৯৬০ জন।