করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে অস্বস্তি ছিল। হতাশাও ছিল জনমনে। কারণ বাংলাদেশ কার কাছ থেকে টিকা আনবে তা ছিল সম্পূর্ণ অজানা। সে আশঙ্কা দূর হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি টিকাই আনতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তিন কোটি ডোজ টিকা আনা হবে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়েছে। এই তিন কোটি টিকা বাংলাদেশের দেড় কোটি মানুষকে দেয়া হবে। কারণ প্রত্যেক মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দিতে হবে। বাংলাদেশে প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়বে পাঁচ ডলার। চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে এ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসা শুরু হতে পারে। বলা হয়েছে, ভারত যে দামে ভ্যাকসিন পাবে সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকেও একই দামে সরবরাহ করবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষামুলক প্রয়োগ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। বর্তমানে এটি তৃতীয় ধাপে রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। মন্ত্রী অবশ্য বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন থাকলেই কেবল এই টিকা আমদানি করা হবে। কারা প্রথমে ভ্যাকসিন পাবেন এ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে কর্মরত সম্মুখসারির যোদ্ধা, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, পুলিশ, করোনা আক্রান্ত রোগী, গণমাধ্যম কর্মী ও বয়স্ক ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে পর্যায়ক্রমে সবাইকেই দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপনসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জনস্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান এ সময় সাংবাদিকদের জানান, এই মুহূর্তে বিশ্বের নয়টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পূর্ণ করেছে। এর মধ্যে ছয়টির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ।
ওদিকে ৫৬ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৮৪২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর আগে গত ১০ই সেপ্টেম্বর সমসংখ্যক রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য দপ্তর।
গত এক দিনে ১৭ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ছয় হাজার ২১ জন।