বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থান নয় শুধু ,উগ্রবাদ যে বাংলাদেশে এখন ও গোপনে সক্রিয় রয়েছে সেখানকার সরকারের সাম্প্রতিক তৎপরতায় সেটি পরিস্কার বোঝা যায়। কিছুদিন আগেই সেখানে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামি সংগঠন হারকাতুল জিহাদের নেতা , বর্তমানে কারারুদ্ধ মুফতি হান্নানকে পুলিশ আবারও রিম্যান্ডে নিয়েছে। ঐ সংগঠনটি ২০০১ সালে বাংলাদেশে একটি ক্যাথলিক গির্জায় বিস্ফোরণ দশজন খ্রীষ্টান নিহত হয়।
বাংলাদেশে এই সংগঠনগুলোর তৎপরতা সম্পর্কে আমাদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সিঙ্গাপুরের International Center for Political Violence & Terrorism Research এর অধ্যাপক রোহান গুণরাত্না বলেন যে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি সক্রিয় রয়েছে। তবে গত পাঁচ বছরে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসী গোষ্ঠি যারা বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করেছে সে দুটি হচ্ছে জেএমবি জামিয়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ মুজাহিদিন বাংলাদেশ এবং তারই একটি শাখা জেএমজেবি আর অন্য গোষ্ঠিটির নাম হচ্ছে হুজিবি , হারকাতুল জিহাদে ইসলামি বাংলাদেশ আর এই হুজিবি বাংলাদেশের গোষ্ঠি হলেও এটি বস্তুত এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলির সম্পর্ক রয়েছে। তবে জে এম বি টা হচ্ছে একেবারে অভ্যন্তরীণ উগ্রপন্থি গোষ্ঠি যাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এ প্রসঙ্গেই টেলিফোনে কথা হচ্ছিল শিকাগো থেকে টেলিফোনে স্টিভ ইমারসানের সঙ্গে । ইমারসান হচ্ছেন Investigative Project on Terrorism এর নির্বাহি পরিচালক। তিনি মনে করেন যে পঞ্চাশের দশক থেকেই দক্ষিণ এশিয়ায় উগ্র ইসলামি মতবাদ প্রাধান্য পেতে শুরু করে। তিনি আরও বলেন পাকিস্তানসহ বাংলাদেশে এবং দক্ষিণ পুর্ব এশিয়ার অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ইসলমি কট্টরপন্থিদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও এর অনুপ্রেবেশের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং বাইরে থেকে যে সব প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া আসছে তার থেকে বাংলাদেশকে সম্পুর্ণ সুরক্ষিত মনে করা যায় না।
ড রোহান গুণরাত্না বলছিলেন এই সব কোন কোন জঙ্গি গোষ্ঠির সঙ্গে অন্যান্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক জঙ্গির যোগসাজশ রয়েছে। তিনি বলছেন হুজিপি,মানে হুজি পাকিস্তান এবং হুজি বাংলাদেশ এই দলগুলির উৎপত্তি আফগানিস্তানে এবং দুটো গোষ্ঠিই আল ক্বায়দার সঙ্গে ব্যাপক ভাবে সম্পৃক্ত। আর ঐ গোষ্ঠিটির সঙ্গে আল ক্বায়দার আগের যে গোষ্ঠি ছিল সেই মাকতাব আল খিদামাত কিংবা আফগান বিউরোর ও সংশ্লিষ্টতা ছিল। তা ছাড়া অন্যান্য পাকিস্তান আফগানিস্তানের অন্যান্য উগ্রবাদি সংগঠনের সঙ্গে ও এই হুজিবি’র যোগাযোগ।
স্টিভ ইমারসান ও এ ধরণের যোগাযোগের সমর্থনে বলেন আমার মনে হয় কিছু কিছু গোষ্ঠির যোগাযোগ নিশ্চিত ভাবে বাইরের দেশের সঙ্গে রয়েছে। তাদের সামরিক সম্পৃক্তি রয়েছে এবং তাদের আর্থিক ও রাজনৈতিক সম্পৃক্তি রয়েছে। যেমন ধরুন যুক্তরাষ্ট্রে কোন কোন ইসলামি গোষ্ঠি যেমন মুসলিম আমেরিকান সোসাইটি , যা কীনা মুসলিম ব্রাদাহুড এবং আমেরিকান মুসলিম টাস্ক ফোর্সের প্রকাশ্য সংগঠন , বাংলাদেশে কট্টর ইসলামি দল জামাতে ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযানের সমালোচনা করেছে । জামায়াতে ইসলামি দলটি মূলত রাজনৈতিক দল । তাদের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনগুলির সম্পৃক্ততা কি ভাবে থাকতে পারে , সে সম্পর্কে অধ্যাপক গুণরত্ন মনে করেন