অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

করোনা শনাক্তকরণ টেস্টের হিসাবে অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ


করোনা সংক্রমণের টেস্ট
করোনা সংক্রমণের টেস্ট

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের টেস্ট কম হওয়ায় আসলে কতো মানুষ প্রতিদিন সংক্রমিত হচ্ছেন তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি আগা-গোড়াই বলে আসছে- টেস্ট বাড়ান। কিন্তু তা বাড়ানো হয়নি। ওয়ার্ল্ডোমিটারের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত প্রথম ৩০টি দেশের মধ্যে গড়ে প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে বাংলাদেশে টেস্ট করা হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার ৯৮ টি। যা সবচেয়ে কম।

দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশ ভারত। বাংলাদেশ থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন তিন কোটি ২২ লাখ। প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে সেখানে টেস্ট করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৪৪২টি। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তান। বাংলাদেশ থেকে অনেকদিন এগিয়ে ছিল। এখন ১০ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯৯ শনাক্ত নিয়ে ৩১ তম স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। সেখানে প্রতি দশ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে সেখানে টেস্ট করা হয়েছে ৭৪ হাজার ৪২২টি। নেপালেও বাংলাদেশের তুলানায় বেশি টেস্ট করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রাম শুধু নয়, শহরেও কম টেস্ট হচ্ছে। অনেকেই টেস্ট করাতে আগ্রহী নন। গ্রামের দিকে বেশিরভাগ মানুষ সর্দি-কাশি মনে করে টেস্টের ধারে কাছেও আসে না। এর ফলে মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে অথচ জানা যাচ্ছে না।

ওদিকে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সরকারের লকডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে একমত নয়। কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাড়াহুড়া করার কারণে সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাবার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে অর্থনীতি হুমকির মধ্যে পড়বে। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকে আরও বলা হয়, লকডাউন আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখতে পারলে সুফল পাওয়া যেত। এই অবস্থায় কমিটি সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তসমূহ পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেছে। সামাজিক অনুষ্ঠান, পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র আরও কিছুদিন বন্ধ রাখার পক্ষেও মত দিয়েছে কমিটি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক কমিটির পরামর্শ নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেছেন, জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এটাও বলেছেন, দেশ আর মৃত্যু দেখতে চায় না।

করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে এসে ভোগান্তি পোহানোর অভিযোগ করছেন প্রবাসগামীরা। বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রথমে ফাইজারের টিকা দেয়া হলেও এখন মর্ডানার টিকা দেয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরে এই টিকা দেয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশগামীরা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করে টিকা নিচ্ছেন।

স্পষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ায় গ্রাম থেকে টিকা নিতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। শনিবার রাজধানীর পরীবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের একটি কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা প্রবাসীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। বিশৃঙ্খলা ও হয়রানির অভিযোগ করেন তারা। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন, টিকার এসএমএস পাওয়ার আগেই অনেকে চলে আসায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া একই কেন্দ্রে সাধারণ টিকাদান কর্মসূচি ও প্রবাসীদের টিকা দেয়ার কার্যক্রম চলায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলেও তারা জানান।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ১৭৮ জন। এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৮৫ জন।

XS
SM
MD
LG