করোনা ভাইরাস এবং লকডাউনের জন্য বিশ্বের নানা জায়গায় আটকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় সরকার ৬৪টি উড়ানের ব্যবস্থা করেছে। আগামী ৭ই মে থেকে ১৩ই মে পর্যন্ত এই বিমানগুলি ১২টি দেশ থেকে আটকে থাকা নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনবে। সেই সঙ্গে ভারতীয় নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে বিমানে করে আনা অসুবিধে হচ্ছে বা জায়গা কম পড়ছে, সেখানে নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ব্যবহার করা হবে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, এই ভাবে ১৪৮০০ ভারতীয়কে নানান জায়গা থেকে দেশে ফেরানোর কাজটি যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। সুতরাং তাঁদের প্রত্যেককে আসার ব্যয়ভার বহন করতে হবে।
সেই সঙ্গে বিমান বা জাহাজে ওঠার আগে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আছে কিনা দেখার জন্য যে খরচা হবে সেটাও যাত্রীদের দিতে হবে। দেশে ফিরে আসার পর তাঁদের যে দু'সপ্তাহ কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে তার খরচও তাঁদেরই দিতে হবে। এর আগে পর্যন্ত বিদেশ থেকে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনস বা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান যে ভারতীয়দের দেশে ফেরত এনেছিল তার জন্য একটি পয়সাও নেওয়া হয়নি। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের নিজের রাজ্যে নিজের নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনার জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করার সময় তাঁদের কাছ থেকে যে টিকিটের ভাড়া আদায় করার কথা প্রথমে বলা হয়েছিল, তার প্রবল সমালোচনা হচ্ছে। এবং চাপে পড়ে যদিও সেই ভাড়া আর শ্রমিকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে না বলে রেল জানিয়েছে, তবু কেন্দ্রীয় সরকার এখন বিমানে বা জাহাজে করে ভারতীয়দের আনার খরচটাও নিয়ে নিচ্ছে। কারণ যাঁদের আনা হচ্ছে তাঁরা প্রত্যেকেই সম্পন্ন ঘরের মানুষ বলে ধরে নেওয়া যায়, সুতরাং তাঁদের এই টাকা দিতে অসুবিধা থাকার কথা নয়।
এখন পর্যন্ত ঠিক আছে যে, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, বাংলাদেশ, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, সিঙ্গাপুর, ফিলিপিনস্, মালদ্বীপ থেকে ভারতীয়দের নিয়ে আসা হবে। অগ্রাধিকার পাবেন অসুস্থ, বয়স্ক ও সন্তানসম্ভবারা। তবে কারো করোনার উপসর্গ থাকলে বিমানে বা জাহাজে উঠতে দেওয়া যাবে না। এই ভাবে দিনে দেড় থেকে আড়াই হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।